নয়াদিল্লি: পোড়খাওয়া প্রবীণ রাজনীতিক শরদ পাওয়ারের (Sharad Pawar) মধ্যস্থতায় অবশেষে সাভারকর (VD Savarkar) নিয়ে উদ্ধব সেনা (Uddhav Sena)-রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) মান-অভিমানের জট কাটল। এনসিপি (NCP) নেতা পাওয়ার বিরোধী জোটের জট কাটাতে পদক্ষেপ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধী সাভারকর নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধব ঠাকরের সেকেন্ড ইন কমান্ড সঞ্জয় রাউতকে রাহুল গান্ধী আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি সাভারকর প্রসঙ্গ এড়িয়ে চলবেন। অন্যদিকে, সঞ্জয় রাউতও মঙ্গলবার জানান, ওনারা যদি ঠিক করে থাকেন, এ ধরনের মন্তব্য করবেন না, তাহলে তো ভালোই। আমি রাহুলজির সঙ্গে কথা বলেছি। আমি মনে করি সব ভালোয় ভালোয় মিটে গিয়েছে।
লোকসভায় রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ খারিজ হওয়ার পর শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নে কংগ্রেস নেতা বলেন, তাঁর পদবি সাভারকর নয়। গান্ধী। গান্ধীরা কোনওদিন কারও কাছে ক্ষমা চায়নি। এই নিয়েই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে উদ্ধব সেনা। রাজধানীতে বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠকে এর আগে উপস্থিত থাকলেও রাহুলের এই মন্তব্যের পরেই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বৈঠকে গরহাজির থাকে উদ্ধব গোষ্ঠী।
আরও পড়ুন: Parth Pratim Roy | সিবিআই নিরপেক্ষ তদন্ত করলে মুখ পুড়বে বিজেপিরই, দাবি জেলা তৃণমূলের
দিল্লির রাজনীতির বাইরেও মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট মহাবিকাশ আঘাড়ির শরিক দল হল উদ্ধব সেনা, কংগ্রেস এবং পাওয়ারের এনসিপি। ফলে রাহুলের মন্তব্যের জেরে সেই জোটেও ফাটল ধরতে পারে। এইসব কারণে মতানৈক্য দূর করতে আসরে নামেন অতীতের কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাওয়ার।
উদ্ধব ঠাকরে এবং সঞ্জয় রাউতরা স্পষ্টতই রাহুলকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়েছিলেন। কারণ, বিনায়ক দামোদর সাভারকর মহারাষ্ট্রের রাজনীতি বিশেষ করে শিবসেনার কাছে এক পূজ্য নেতা। তাই তাঁকে অপমান করার ঘটনা মানতে নারাজ ঠাকরে গোষ্ঠী। সে কারণে সোমবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা বিরোধীদের বৈঠকে উপস্থিত হয়নি উদ্ধব সেনা। তারপরই শান্তি-আলোচনার জন্য মধ্যস্থতায় নামেন পাওয়ার।
শরদ পাওয়ার বিরোধী দলের বৈঠকের সময় কথা বলেন সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। তিনি তাঁদের সাভারকর সম্পর্কে মহারাষ্ট্রের মানুষের ভাবাবেগের কথা বোঝান। সূত্রে জানা গিয়েছে, পাওয়ার রাহুলকে একথা বলেন যে সাভারকর কোনওদিনই আরএসএসের সদস্য ছিলেন না। এই মন কষাকষি জোটের পক্ষে হানিকর। তাঁদের সম্মিলিত লড়াই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপির বিরুদ্ধে। যেটা ঘটছে তাতে মহারাষ্ট্রের বিরোধী জোট দুর্বল হয়ে পড়বে।
তাঁর কথায় সাভারকর ইস্যুতে কংগ্রেস নেতা সুর নরম করে পথ চলতে রাজি হন বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধবের ঘনিষ্ঠ নেতা তথা শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতও এদিন বলেন, ওরা যদি এসব এড়িয়ে চলতে রাজি থাকে তাহলে খুব ভালো। রাহুলজির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এখন সব ঠিক আছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশও এদিন জোর দিয়ে বলেন, কাল আমরা ১৮ দল ছিলাম। কিন্তু আজ থেকে আমাদের সংখ্যা ১৯।