Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Fourth Pillar | ১৮–২২ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশনে নির্ভেজাল বাওয়াল হবে
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  কৃশানু ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১০:২০:০০ পিএম
  • / ২৫৩ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • কৃশানু ঘোষ

ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের প্রথম দিনেই বোমা ফাটালেন মোদি সরকারের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি। সকালবেলাতেই টুইট করে জানালেন, সংসদের দুই কক্ষের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হচ্ছে ১৮–২২ সেপ্টেম্বর, অধিবেশন বসবে ৫ দিন। মাথায় রাখুন, মাত্র ক’দিন আগেই শেষ হয়েছে বর্ষাকালীন অধিবেশন, ডিসেম্বরে শীতকালীন অধিবেশন তো হবেই, কিন্তু তার মধ্যে বিশেষ অধিবেশন ডাকলেন সরকার। এমনিতে মানে টেকনিক্যালি সরকার বিশেষ কারণে বিশেষ অধিবেশন ডাকতেই পারেন, কিন্তু এ তাবতকাল সংসদীয় দফতরের সার্কুলার পৌঁছত সংবাদমাধ্যমের কাছে, মানুষ জানতে পারতেন, একই সঙ্গে সাংসদদেরও জানানো হত। কিন্তু মোদি জমানায় রীতিনীতি, পদ্ধতি, ভদ্রতা, সভ্যতা ইত্যাদির বালাই তো কবেই উঠে গিয়েছে আপাতত সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হচ্ছে টুইটারে, কেন? কী এজেন্ডা? যৌথ অধিবেশন কি না? এসব কিচ্ছুটি লেখা নেই, টুইটারে কেবল লেখা হয়েছে ১৮–২২ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। এই টুইটারে বোমা ফাটানোটা পরিকল্পিত, একটা বড় উদ্দেশ্য হল দৃষ্টি আকর্ষণ করা। সেটা অবশ্য সফল, সংবাদমাধ্যমে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের থেকেও গতকাল প্রাধান্য পেয়েছে আচমকা এই সংসদের অধিবেশন ডাকার খবর। হাজার একটা সম্ভাবনা নিয়ে মাথা খাটিয়েছেন সাংবাদিকেরা, বিভিন্ন সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট, এবং অবশ্যই বিরোধী দলের নেতারা। আচ্ছা, এরকমটা আবার ভেবে বসবেন না যে বিজেপি দলের নেতারাও প্রত্যেকে জানেন, এই বাংলায় তাঁদের একজন ফোন করেছিলেন, কোনও আইডিয়া আছে? এটা কি ইউনিফর্ম সিভিল কোডের জন্য? আমার উত্তর কী ছিল, সেটা পরে বলছি। 

কিন্তু এই বিশুদ্ধ চমক যে যে কারণে বাজারে ছাড়া হল তার প্রথমটা হল, ইন্ডিয়া জোটের আলোচনা, নতুন করে আদানি গোষ্ঠী আর তাদের সঙ্গে মোদি সরকারের যোগসাজশ নিয়ে আলোচনা ইত্যাদির উপরে চলে যাবে এই সংসদের আচমকা অধিবেশনের আলোচনা এবং   আদানির চুরি আর সেই চুরিতে মোদি সরকারের ভূমিকা একটু হলেও কম গুরুত্ব তো পেল। এ তো গেল প্রথম উদ্দেশ্যের কথা, কিন্তু যা নিয়ে আলোচনা সংসদের এই বিশেষ অধিবেশনে কী হতে চলেছে? যা হবে তার উদ্দেশ্যটা কী? আসুন সেই আলোচনায় আসি। আগেই বলে রাখি এই সরকারের এক এবং অভিন্ন উদ্দেশ্য হল দেশের মানুষকে হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করা, সাম্প্রদায়িক ঘৃণা ছড়ানো, এটা তাঁদের প্রথম উদ্দেশ্য। প্রথম যে তত্ত্ব সাংবাদিকদের কেউ কেউ বা বিরোধী দলেরও কিছু নেতার মুখ থেকে শোনা যাচ্ছে তা হল মোদিজি ইউনিফর্ম সিভিল কোড আনতে চান, আচ্ছা এটা কি নতুন কিছু? সেই ১৯৫৬-তে আরএসএস-এর কর্মসূচি খুলে দেখবেন, ৩৭০ ধারা বিলোপ, তিন তালাকের অবসান, রামমন্দির, অযোধ্যা, মথুরা, কাশী, গোহত্যা নিবারণ আর এই ইউনিফর্ম সিভিল কোডের কথা লেখা আছে। দুটো হয়নি, কেন হয়নি? গো-হত্যা নিবারণ হয়নি কারণ ভারত বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম বিফ সাপ্লায়ার, কোই ধন্দা ছোটা নহি হোতা আউর ধন্দে সে বড়া কোই ধরম নহি হোতা, গুজরাত পুত্র মোদি–শাহ এটা জানেন, কাজেই বিফ ব্যান হয়নি। আর ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করলে তা বহুভাবে ব্যুমেরাং হতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এরকম সিদ্ধান্ত নিলে ওয়াইএসআরসিপি বা বিজেডি অন্য সুরে কথা বলতে পারে, কাজেই ওটাও আপাতত হচ্ছে না। 
আরএসএস–বিজেপি খুব ভালো করেই জানে যে ইউনিফর্ম সিভিল কোডের বিরোধিতা হিন্দু ধর্মের পণ্ডিতদের তরফ থেকেও আসতেই পারে। মানে ধরুন এখন লাভ জেহাদ বলে পিটিয়ে দেওয়া যাচ্ছে, তখন দেশের বিবাহ আইনেই বিয়েটা সেরে ফেললে তাকে কি এত অনায়াসে লাভ জিহাদ কি বলা যাবে? কিন্তু মুসলমান শরিয়তি আইন মেনে কাজি ডেকে বিয়েটা হলে? ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটানো অনেক সহজ হবে। একজন পণ্ডিত বলেছেন ভোট এগিয়ে আনা হতে পারে, হতেই পারে, আমরা মাস দুই আগে এই চতুর্থ স্তম্ভতেই এই কথা বলেছিলাম, কিন্তু তার জন্য সংসদের অধিবেশন ডাকার দরকারটা পড়বে কেন? কয়েক জন বলছেন ১৯৯১-তে ধর্মীয় স্থল সংরক্ষণ আইন হয়েছিল, যে আইনে বলা হয়েছিল অযোধ্যা ছাড়া ১৯৪৭-এর সময় যে ধর্মস্থান যেরকম ছিল, সেগুলোর আর কোনও পরিবর্তন করা যাবে না, সেই আইন বদলানোর জন্য এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। আইনের কোনও পরিবর্তন ছাড়াই আদালতেও মামলা চলছে, বিবৃতিও দিচ্ছেন সাধুসন্তরা, কাজেই ওই আইনে কিচ্ছু আটকাবে না। তবুও বলি এই আইন পরিবর্তনের জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকার মত বোকা আরএসএস–বিজেপি নয়। এক বিরাট সংখ্যক সাংবাদিক, কলামনিস্ট, বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, মোদিজি এক দেশ, এক নির্বাচন চান। মানে সারা দেশে একই সঙ্গে লোকসভা বিধানসভা নির্বাচন হবে, এতে নাকি দেশের অনেক খরচ বাঁচবে।  আজকেই জানা গেল, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে এক কমিটিও নাকি তৈরি হচ্ছে। তো কমিটিই যদি তৈরি করা হয়, তার ঘোষণার জন্য বিশেষ অধিবেশনের দরকার কেন হবে? ঘোষণা করে দিলেই হল। তাছাড়া এই এক দেশ, এক নির্বাচন আজকের কথা নয়, নির্বোধদের পাঠশালায়, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটিতে এরকম কথা আজ নয় বহুদিন ধরেই তোলা হচ্ছে। মোদিজির এটা পছন্দ হতেই পারে, যিনি ডিমনিটাইজেশন করে দেশের কালো টাকা বের করার কথা বলেন, তিনি এমন উদ্ভট প্রস্তাবে নেচে উঠতেই পারেন। কিন্তু এর বহু সমস্যা আছে, সেগুলোও তো বহুবার আলোচনা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ইন্ডিয়া জোটে কোন শরিকের কী কী লাভ 

ধরুন আমাদের সংবিধান মোতাবিক ৫ বছর পরে পরে বিধানসভার আর লোকসভার নির্বাচন করতে হবে। ধরুন তা খরচ বাঁচানোর জন্য একসঙ্গে করা হল। হতেই পারে যে লোকসভা এবং দুটো বিধানসভায় স্পষ্ট রায় এল না, সরকার তৈরি করার চেষ্টা হল, কিন্তু মাস তিন চার পরে বোঝা গেল সরকার তৈরি করা সম্ভব নয়, কী হবে? আবার পাঁচ বছর পরে নির্বাচন হবে? বিধান সভায় হাং অ্যাসেম্বলি হতেই পারে, কী হবে? পাঁচ বছর পরে নির্বাচন, এই পাঁচ বছর কী হবে? এবং এইভাবেই সবটা এগিয়ে বা পিছিয়ে যেতেই পারে, তখন আবার একসঙ্গে নির্বাচন? যাঁরা সংবিধান তৈরি করেছিলেন, তাঁরা এ নিয়ে কম ভাবেননি, তাঁরা যথেষ্ট শিক্ষিত ছিলেন, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন না। তারপরেও ধরুন আজ সিদ্ধান্ত নেওয়া হল এক দেশ এক নির্বাচন, এই বাংলার সরকারের কী হবে? এই সরকার তো পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত, তাঁরা মানবেন? সবে কর্নাটকের নির্বাচন হয়েছে, সেখানে কী হবে? এবং এটা যে কেবল আমরা জানি তাই নয়, মোদি–শাহও জানেন, জানেন বলেই মাঝেমধ্যে কথা তোলেন আবার চেপে যান। এই এক দেশ এক নির্বাচন এক বিরাট প্রক্রিয়া তা ওই ৫ দিনের বৈঠকে শেষ করা সম্ভব নয়, কাজেই এই উদ্দেশ্য নিয়েও ওই ৫ দিনের বৈঠক ডাকা হয়নি। এছাড়াও অনেকে বলছে জরুরি অবস্থা জারি হবে, অনেকে বলছে চীন-ভারত যুদ্ধ হবে, নানান রকম কথাবার্তা ভাসছে। তার কারণ হল মোদিজির চমকে দেওয়ার অদম্য ইচ্ছে, সেই যেদিন থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, সেদিন থেকেই উনি দেশের মানুষকে চমকে দিতে চান। রাত আটটায় ভাষণ দিতে এলেন, মন্ত্রিসভার কেউ জানেন না, উনি ডিমনিটাইজেশনের ঘোষণা করে দিলেন, লোকজন মরছে উনি থালা বাজানোর নিদান দিলেন, এসব তো আমরা দেখেছি, কাজেই হাজার একটা থিওরি ভাসছে। 

কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে আপনাদের বলতে পারি এই পাঁচদিনে সংসদে যা হবে তাকে বিশুদ্ধ বাওয়ালও বলাই যায়। আগে তো বর্ষাকাল, গ্রীষ্মকাল, শীতকাল ইত্যাদি জানতাম, মোদিজি আসার পরে জানতে পারছি কর্তব্যকাল, অমৃতকাল, প্রলয়কাল ইত্যাদি আরও কত কাল। তো ওঁর সেই অমৃতকাল শেষ করে আমরা নাকি কর্তব্যকালে ঢুকে পড়ব তার আগে এই অমৃতকালেই কিছু আলোচনা সেরে ফেলতে হবে তাই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। আমাদের কাছে যা খবর তা হল এই পাঁচদিনের অধিবেশন সম্ভবত হবে নতুন সংসদ ভবনে, যা নির্বাচনের আগে আবার একটা মোদি ইভেন্ট হয়ে উঠবে। জি টেয়েন্টি বৈঠকে ভারতবর্ষের অবস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলবেন আর বলা হবে এই অমৃতকালে আমাদের প্রাপ্তির কথা, মানে সরকারি প্রোপাগান্ডা। রামমন্দির থেকে ৩৭০ ধারা থেকে শুরু করে নতুন সংবিধান, নতুন ইতিহাস লেখার জন্য এক বিরাট ব্যবস্থা ইত্যাদির কথা বলা হবে। আমরা নাকি কেবল মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস পড়েছি, দেশের নতুন ইতিহাস লেখা হবে এই অমৃতকালে তারই সূচনা হবে। এইরকম বেশ কিছু বিষয় আনা হবে, এই ইস্যুগুলোতে বিরোধীদের মতবিরোধের কথাও বিশেষভাবে মাথায় রাখা হবে। পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের আগে এক বড়সড় প্রচার আর নতুন করে সাম্প্রদায়িকতার জিগির তোলার জন্যই এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। একটা কথা তো পরিষ্কার, ইন্ডিয়া জোট কিন্তু মোদিজি, অমিত শাহ, বিজেপিকে ভাবাচ্ছে, খানিক চিন্তায় ফেলেছে, নতুন নতুন স্ট্রাটেজি বার করতে বাধ্য করছে। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের দিনেই দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করতে হচ্ছে, এই সবই এক নার্ভাস মোদিজির ছবি, যে ছবিকে পালিশ করার জন্যই ওই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে, যেখানে ১০০ শতাংশ প্রোপাগান্ডা আর নির্ভেজাল বাওয়াল ছাড়া অন্য কিছুই হবে না।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team