কলকাতা: খড়গ্রাম, চোপড়া ও ভাঙড়ের ঘটনার পরও নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে রাজ্যে কোনও মৃত্যুর ঘটনা নেই। পুলিশের তরফে কমিশনে এমনই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯০। মোট ৩০টা হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। এ পর্যন্ত ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৫৬টা বোমা উদ্ধার হয়েছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক জমা হয়েছে ৪,৭৮৭টি। জামিন অযোগ্য ধারায় ১,৮০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মনোনয়ন শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক কারণে নিহতের সংখ্যা কমিশনে পুলিশ মারফত পৌঁছয়নি।
অথচ মনোনয়ন জমার প্রথম দিনেই মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে এক কংগ্রেস কর্মী খুন হন। বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমার শেষদিনে উত্তরবঙ্গের চোপড়া ও ভাঙড়ে আরও দুজন খুন হন। কিন্তু, পুলিশের রিপোর্টে সেসবের উল্লেখ না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিরোধী দলগুলি। উল্লেখ্য, এদিন পঞ্চায়েত নির্বাচনের ((panchayat election 2023) মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিনে চোপড়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত ২।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | পঞ্চায়েত নির্বাচনে কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস রাজ্যপালের
বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার কাঁঠালবাড়ি এলাকায় বাম-কংগ্রেসের তরফে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এরপরই ছত্রভঙ্গ হয়ে বাম-কংগ্রেসের মিছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় একজনের, আহত হন আরও ছ’জন। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছিড়িয়েছে এলাকায়। যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁদের মধ্যে একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আশঙ্কাজনক বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। চোপড়া হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহতদের।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিনে হরির লুটের মতো গুলি-বোমা চলল ভাঙড়ে। আইএসএফের দাবি, তৃণমূলের গুলিতে তাদের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর গুলিবিদ্ধ প্রার্থী। গুলিবিদ্ধ হয়েছে আরও কয়েকজন। গুলিতে ভাঙড় ২ বিডিও অফিসের সামনে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। পুলিশের সামনেই শাসকদলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমাবৃষ্টি করে। একের পর এক গুলি চালায়। তাদের তাণ্ডবের বেগ খানিকটা কমে আসার পর পুলিশ তৎপর হয়ে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বাজার এলাকা হওয়ায় বেশ কয়েকটি সবজিবাহী গাড়ি সেখানে ছিল। তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘণ্টা কয়েক ধরে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
যদিও বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোনও ক্ষেত্রেই তৃণমূল কংগ্রেস দায়ী নয়। তিনি বলেন, প্রায় ৭৩-৭৪ হাজার বুথ, সেখানে মাত্র তিনটে গন্ডগোল হয়েছে। তাও সেটা নিজেদের স্থানীয় ব্যাপারে। তৃণমূল কোনওভাবেই এতে জড়িত নয়। ২০০৩-এ সিপিএমের আমলে পঞ্চায়েত ভোটের দিন সম্ভবত ৩৬ জন মারা গিয়েছিল।