নয়াদিল্লি: চীন নিয়ে যখন ভারত উদ্বেগের প্রহর গুনছে, তখন জনমানসেও জল্পনা চলছে ন্যাজাল ভ্যাকসিন (Nasal Vaccine) নিয়ে। সকলকে এই টিকা নিতে হবে কি না, সেটাই মূল জল্পনার বিষয়। শেষমেশ ঝেড়ে কাশলেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের টিকাকরণ টাস্কফোর্সের প্রধান (Covid Task Force Chief ) সাফ জানিয়ে দিলেন, যাঁরা বুস্টার (Booster) ডোজ বা অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে তৃতীয় ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের আর ন্যাজাল টিকা নিতে হবে না।
উল্লেখ্য, ওমিক্রনের নয়া রূপ বিএফ.৭ (BF.7) চীনে মহামারিরূপে দেখা দেওয়ার পর থেকেই ভারত সতর্ক পা ফেলছে। তারপরই ভারত বায়োটেকের ন্যাজাল টিকা ইনকোভ্যাক (iNCOVACC) অনুমোদন পায় কেন্দ্রের। কোউইন অ্যাপেও এই টিকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু, মানুষের মনে প্রবল দ্বিধা দেখা দিয়েছে যে কারা এই টিকা নিতে পারেন।
এ ব্যাপারে টিকাকরণ টাস্কফোর্সের প্রধান এন কে অরোরা বলেন, ন্যাজাল ভ্যাকসিনকে প্রথম বুস্টার হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যদি কোনও ব্যক্তি এর আগে বুস্টার নিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে আর ন্যাজাল ডোজ নিতে হবে না। এটা কেবলমাত্র তাঁদের জন্য যাঁরা এর আগে বুস্টার নেননি। তবে নাকে টিকা নেবেন কিংবা ইঞ্জেকশন আকারে অর্থাৎ কোভিশিল্ড বা কোভ্যাকসিন নেবেন, সেটা তাঁর ইচ্ছা।
কোভিড ওয়ার্কিং গ্রুপের (NTAGI) চেয়ারম্যান অরোরা আরও জানান, টিকাকরণ কর্মসূচিতেই কোউইন অ্যাপে চতুর্থ টিকাকরণের অপশন গৃহীত হবে না। ধরুন আপনি চতুর্থ টিকা নিতে চান। কারণ অনেকের মনে এই ধারণা আছে যাকে অ্যান্টিজেন সিঙ্ক বলে। এর অর্থ হল আপনি যদি একই ধরনের টিকা বারবার নিতে থাকেন, তাহলে আপনার শরীর সেই অ্যান্টিজেন আর গ্রহণ করবে না। কিংবা খুবই দুর্বল প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। যে কারণেই কোভিডকালে দুটি টিকার মধ্যে ৬ মাসের ব্যবধান রাখা হয়েছিল। তারপর ৩ মাসে ব্যবধান করা হয়েছিল। ফলে এবার আপনি যদি চতুর্থ ডোজ নেন, তাহলে তার কোনও মূল্যই থাকবে না, বলেন অরোরা।
তিনি আরও বলেন, ন্যাজাল ভ্যাকসিন আরও উন্নত মানের। কারণ এই টিকা ঢুকছে নাকের ফুটো দিয়ে। যা যাচ্ছে আমাদের শ্বাসক্রিয়া ব্যবস্থায়। ফলে প্রতিরোধ ব্যবস্থাই দেওয়াল তুলে দাঁড়াচ্ছে শ্বাসনালীতে। যে কারণে শুধুমাত্র কোভিড ভাইরাস নয়, অন্যান্য শ্বাসনালীজনিত ভাইরাসও বাধাপ্রাপ্ত হবে।
তিনি জানান, এই টিকা দেওয়া খুবই সহজ। ১৮ বছরের উপরে যে কেউ এটা নিতে পারেন। নাকের প্রতিটি ফুটোয় চার ফোঁটা করে দেওয়া হবে। মোট ০.৫ এমএল ওষুধ প্রয়োগ করা হবে। এই টিকার কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও নেই। ফোঁটা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর্যন্ত নাক বন্ধ থাকার অনুভূতি হবে। এছাড়া আর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। টিকা প্রয়োগের পর ১৫-৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পরই চলে যেতে পারবেন।
মানুষকে কি এভাবে একটার পর একটা বুস্টার ডোজ নিতেই হবে?
অরোরা বলেন, বৈজ্ঞানিক জবাব হল এই মুহূর্তে তার প্রয়োজন নেই। এমনকী উত্তর আমেরিকা কিংবা ইউরোপের যেসব দেশে তৃতীয়, চতুর্থ কিংবা পঞ্ম ডোজ দিয়েছে মানুষ, সেখানেও সংক্রমণ হয়েছে। রোধ করা যায়নি কোভিড।