ওভাল: ১৮ মাস পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দুর্দান্ত কামব্যাক! প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের লম্বা কেরিয়ারে ফর্ম খারাপ যেতেই পারে। তবে নিজের উপর বিশ্বাস এবং কঠোর অনুশীলনে নিমজ্জিত থাকলে সেই ক্রিকেটার একদিন কামব্যাক করবেই। অতীতে এর বেশ কিছু উদাহরণ রয়েছে। মোহিন্দর অমরনাথ-গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ-সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এই মুহূর্তে প্রকৃত উদাহরণ শুক্রবারের মনোরম ওভালের ২২ গজে ব্যাট হাতে শাসন করা অজিঙ্ক রাহানে। ৮৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেললেন। সঙ্গে ১১টি বাউন্ডারি এবং একটি ওভার বাউন্ডারি। স্ট্রাইক রেটও বেশ ঈর্ষণীয়-৬৮.৯৯। একসময় তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটে ব্রাত্য ধরা হচ্ছিল। কিন্তু এই ইনিংস তাঁর সমালোচকদের মুখ বন্ধ করানোর জন্য যথেষ্ট। আর তাঁকে যিনি সঙ্গ দিলেন, তিনি হলেন শার্দূল ঠাকুর ওরফে লর্ড শার্দূল।
শার্দূল-রাহানের ১০৯ রানের পার্টনারশিপ ফলো অনের লজ্জা থেকে বাঁচালো ভারতকে। অস্ট্রেলীয় বোলারদের থেকে চোট পেয়েও ব্যাট হাতে সাহসী ৫১ রানের ইনিংস খেললেন শার্দূল ঠাকুর। ১০৯ বল পর্যন্ত ক্রিজে টিকে ছিলেন। টি-২০ থেকে ফিরেও টিপিক্যাল টেস্ট টেম্পেরামেন্ট দেখালেন। এদিন উইকেটের অপর প্রান্ত থেকে শিট অ্যাংকরের ভূমিকায় ধরা দিলেন তিনি। বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠালেন ৬ বার। তবে রাহানে আউট হতেই হয় ছন্দপতন! নিজের শরীরকে শূন্যে ভাসিয়ে ফোর্থ স্লিপ এবং গালির মাঝ বরাবর অঞ্চল থেকে যেভাবে রাহানের ক্যাচটি নিলেন ক্যামেরন গ্রিন, সেটা অনেকদিন মনে রাখবে কেনিংটন ওভাল। ভারতের ইনিংস শেষ হয় ২৯৬ রানে। অস্ট্রেলীয় সিমারদের মধ্যে প্যাট কমিন্স ৩, স্টার্ক-বোল্যান্ড এবং গ্রিন নেন ২টি করে উইকেট।
এরপর অস্ট্রেলিয়া ব্যাট করতে নামলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১২৩ রান তুলে ফেলে। ক্রিজে রয়েছেন মারনাস লাবুশানে (৪১) এবং ক্যামেরন গ্রিন (৭)। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে সিরাজ-শামিদের পেস অ্যাটাকের সামনে নাজেহাল দেখায় অস্ট্রেলীয় ব্যাটারদের। ওভাল ট্র্যাকের অসমান বাউন্স বারবার সমস্যায় ফেলছিল অজি ব্যাটারদের। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে (১) দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরান মহম্মদ সিরাজ। এরপর উমেশ যাদবের বলে ফিরে যান অপর ওপেনার উসমান খোয়াজাও (১৩)। প্রথম ইনিংসের দুই নায়ক স্টিভ স্মিথ (৩৪) এবং ট্রেভিস হেডকে (১৮) প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান রবীন্দ্র জাডেজা।
তৃতীয় দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়ার লিড ২৯৬ রানের। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন। অস্ট্রেলিয়াকে দ্রুত অল আউট করতে না পারলে, এবারের মতো বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের স্বপ্ন টেমস নদীতেই বিসর্জন দিয়ে আসতে হবে।