আগ্রা: ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আগ্রার (Agra) একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক বিজয় শর্মার (Vijay Sharma) স্ত্রী নীলম শর্মাকে (Neelam Sharma) কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। শুক্রবার এই ঘটনার ন’বছর পর আদালত অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৭২ হাজার টাকা জরিমানা ঘোষণা করে। ওই ঘটানার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রাথমিকভাবে কোনও সুরাহা খুঁজে পায়নি। আশ্চর্যের বিষয় বিজয় শর্মার পোষ্য টিয়াপাখি সন্ধান দেয় আসল খুনিকে ধরতে। ভাবছেন কীভাবে? এই ঘটনার বেশকিছুদিন কেটে গেলেও পুলিশের তরফে তদন্তে কোনওভাবেই খুনির সন্ধান মিলছিল না। আচমকাই একদিন বিজয়ের ভাইপো আশুর নাম ধরে পোষ্য ওই টিয়া চিৎকার করতে থাকে। এরপরই সন্দেহ দানা বাঁধে বিজয়ের। কোনও কিছু না ভেবেই গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানান বিজয়। এরপরই আশুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। আর সেখানেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুারি ফিরোজাবাদে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান বিজয় ও তাঁর ছেলে রাজেশ এবং মেয়ে নিবেদিতা। ওইদিন বাড়িতেই ছিলেন বিজয়ের স্ত্রী নীলম শর্মা। রাতে বাড়ি ফিরে রক্তাক্ত অবস্থায় নীলম ও তাঁর পোষ্য কুকুরকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে বিজয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসক। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নীলমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। কিন্তু তাতেও আসল খুনির সন্ধান মিলছিল না পুলিশের কাছে। ঘটনার পর থেকেই বিজয়ের পোষ্য টিয়াপাখি খাওয়া বন্ধ করে দেয়। এরপরই তাঁর সন্দেহ হয়। পোষ্যের সামনেই বিজয় একের পর এক ব্যক্তির নাম বলতে থাকেন। আর তাতেই উঠে আসে ভাইপো আশুর নাম। জানা যায়, বিজয় আশুর নাম বলতেই ওই টিয়াপাখি ভয়ে আশু আশু করে চিৎকার করতে থাকে। এরপরই দেরি না করে গোটা ঘটনা পুলিশকে জানান বিজয়। আটক করা হয় আশুকে। জেরায় আশু খুনের কথা স্বীকারও করে। তিনি ও তার এক বন্ধু রনি ম্যাসি এই হ্ত্যা করে বলে জানা যায়। দুজনকেই গ্রেফতার করে পুলশ।
আরও পড়ুন: VC Recruitment | উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের আবেদনে সায় সর্বোচ্চ আদালতের
নীলম শর্মার মেয়ে নিবেদিতা শর্মা বলেন, আশু নিয়মিত বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। এমনকী তাঁদের বাড়িতেও অনেক বছর ধরে থাকতেনও। তাঁর বাবা তাকে এমবিএ পড়ার জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। আশু জানত, বাড়িতে গয়না ও নগদ টাকা কোথায় রাখা থাকে। নিবেদিতার দাবি, আশু উদ্দেশ্য ছিল, ডাকাতি ও হত্য়া করা। তাঁদের পোষা কুকুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নয় বার এবং তাঁর মাকে ১৪ বার কুপিয়েছে।
নিবেদিতা আরও জানান, ওই ঘটনার ছয় মাস পর পাখিটি মারা যায়। ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর বিজয় কোভিড আকেরান্ত হয়ে মারা যান। তিনি বলেন, আমার বাবা চেয়েছিলেন আশুকে ফাঁসি দেওয়া হোক। তাই আমরা আশুর ফাঁসির আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হব।