কলকাতা: সিঙ্গুরের (Singur) মাটি থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) অগ্রগতির যাত্রা শুরু। জমি আন্দোলনের (Land Movement) সেই ভূমি থেকেই জোড়া ভোটের প্রচার শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে এক সরকারি অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন নীতি নিয়ে স্বমহিমায় আক্রমণ শানান মমতা। শুধু তাই নয়, গত বিধানসভা ভোটের (Assembly Vote) ধাঁচে এবারেও ভাষণ শেষে ‘খেলা হবে’র প্রতীক হিসেবে ফুটবল ছোড়েন মমতা। অর্থাৎ পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote 2023) থেকে লোকসভা ভোট (Lok Sabha 2024) পর্যন্ত বিজেপিকে (BJP) এককথায় এদিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি।
গ্যাসের দামবৃদ্ধি (LPG Price) থেকে জিএসটি (GST), ১০০ দিনের কাজ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে তোপ দাগেন। তিনি এও বলেন, যে প্রতিবাদের অর্থ কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে চমকানো, ভয় দেখানো চলছে। কিন্তু, তাঁর ভাষণের আগাগোড়ায় কোথাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কিংবা গৌতম আদানির নাম উচ্চারণ করেননি তৃণমূল নেত্রী।
আরও পড়ুন: Kolkata High Court | শহীদ মিনার চত্বরেই হচ্ছে অভিষেকের সভা, শর্তসাপেক্ষে ছাড়পত্র আদালতের
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর লোকসভা সদস্যপদ খারিজ নিয়েও কোনও কথা বলেননি। অথচ, রাহুলের সদস্যপদ খারিজ নিয়ে গতকাল, সোমবারই মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ জহর সরকার এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, যেভাবে অন্যায়ের আশ্রয় নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে, তার বিরোধী তারা। তবে অন্যান্য ইস্যুতে বিজেপির মতোই কংগ্রেসের সঙ্গে সমদূরত্ব নীতিতে চলবে তৃণমূল। এছাড়াও বিরোধী দলগুলির উপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি লেলিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে যে ১৪টি বিরোধী দল আবেদন জানিয়েছে, তার মধ্যেও রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু, এদিন রাহুল প্রসঙ্গে কিছু বলেননি নেত্রী।
ইডি-সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ঘরের মেয়েদেরও রেয়াত করছে না ওরা। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নাকি মহিলাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এজেন্সিগুলোকে। প্রসঙ্গত, তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর-কন্যা কে কবিতা সুপ্রিম কোর্টে এ বিষয়ে একটি আবেদন করেছিলেন। এর আগে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া গান্ধী, দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় কে কবিতাকে ডেকেছিল ইডি।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন গ্রামীণ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা বারবার করে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিদ্ধ করে বলেন, ওহে বাহবা নন্দলাল, এক হাজার একশো উনত্রিশ টাকায় ফুটছে বিনি পয়সার চাল। সব মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণে এদিন সেই আগের আগুন ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সাগরদিঘি উপনির্বাচন এবং ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির জন্য বিজেপির সঙ্গেই কংগ্রেস-সিপিএমকে ফাঁসিকাঠে ঝোলাতে চাইছে তৃণমূল। আগামী দুটো ভোটেই যে মমতা সেই ছকে ময়দানে খেলতে নামবেন, তা এদিন স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী।
