কলকাতা: বাগুইআটি জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। তার আদি বাড়ি বিহারের সীতামারিতে। পুলিশের হাতে পাকড়াও হওয়ার পর জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সত্যেন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল হাওড়া স্টেশনে ট্রাভেল এজেন্সির অফিসে সে কি করছিল? উত্তরে সত্যেন্দ্র জানায়, হাওড়া স্টেশনে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে সে রাত কাটাত।
সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে পালানোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে সে সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বইয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই কারণেই শুক্রবার হাওড়া ট্রাভেল এজেন্সি অফিসের সামনে পৌঁছেছিল। কিন্তু তার ফোনের টাওয়ার লোকেশন ধরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ এবং অবশেষে গ্রেফতার করে ওই দুষ্কৃতীকে। বাগুইআটির ২ যুবককে খুন করার পর দ্রুত কলকাতা ছাড়ার ছক কষছিল সত্যেন্দ্র। আর এজন্য তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে ফোনে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছিল ওই দুষ্কৃতী। পুলিশ সেই ফোনের সূত্র ধরেই পৌঁছে যায় অভিযুক্তের কাছে।
আরও পড়ুন: Police Attacked তোলা আর মদের টাকা না দেওয়ায় পুলিশ কর্মীকে পেটাল দুষ্কৃতীরা
গত ২২ অগস্ট হিন্দুবিদ্যাপীঠের দুই মাধ্যমিকের ছাত্র অতনু দে এবং অভিষেক নস্করকে খুনের অভিযোগ ওঠে সত্যেন্দ্রের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, অতনুদের বাড়ির পাশেই সত্যেন্দ্রের শ্বশুরবাড়ি। যার ফলে অতনুর পরিবারের সঙ্গেও পরিচয় ছিল সত্যেন্দ্রর। এলাকায় বাইক বিক্রির জন্য দালালি করত সত্যেন্দ্র। অতনুর পরিবার সত্যেন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল বাইক কিনে দেওয়ার জন্য। অতনুর পরিবারের অভিযোগ, সেই বাইক আর দেয়নি সত্যেন্দ্র। কিন্তু টাকাও ফেরত দেয়নি। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ওই টাকা ফেরতের জন্য তাগাদা দেওয়ায় অতনুকে নিয়ে গত ২২ অগস্ট একটি বাইকের শোরুমে যায় সত্যেন্দ্র। পুলিশের ধারণা, তার কিছু পরেই খুন করা হয় অতনু এবং তার ভাই অভিষেককে।
এদিকে শুক্রবার অতনু দে এবং অভিষেক নস্করের বাড়িতে তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। দুই কিশোরের বাড়িতে যান তিনি এবং কথা বলেন পরিবারের লোকেদের সাথে। পরে লোকসভায় বিরোধী দল নেতা তাঁর বক্তব্যে অভিযোগ করেন, সরকার থেকে নির্দেশ না দিলে পুলিশ কোন কাজ করে না। পুলিশ যদি ব্যবস্থা নিত তবে এই ঘটনা ঘটত না। তবে শুধু ধৃতই নয় যে বা যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিল তাদেরকেও গ্রেফতার করতে হবে। এই কাণ্ডের সমস্ত তদন্তের ফলাফল জনগণের সামনে আনতে হবে।