নয়াদিল্লি: লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেলেন লাক্ষাদ্বীপের (Lakshadweep) সাংসদ পি পি মহম্মদ ফয়জল। তাঁর সাংসদপদ খারিজকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানির ঠিক মুখেই তাঁকে এমপি পদ ফিরিয়ে দেওয়া হল। শরদ পাওয়ারের দল এনসিপির সাংসদ ফয়জলের লোকসভা সদস্যপদ খারিজ হয় গত ১৩ জানুয়ারি। লাক্ষাদ্বীপের কাওয়ারাট্টির দায়রা আদালত তাঁকে একটি খুনের চেষ্টার মামলায় ১১ জানুয়ারি দোষী সাব্যস্ত ও সাজা ঘোষণা করে।
এনসিপি সাংসদ (NCP MP) মহম্মদ ফয়জলের (Mahammad Faizal) আবেদনের শুনানি (Hearing) সু্প্রিম কোর্টে (Supreme Court) হওয়ার কথা। কেরল হাইকোর্ট (Kerala High Court) তাঁর সাংসদ পদ খারিজের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে সাংসদ পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে। কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকও (Law Ministry) বলেছে, ফয়জলের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু লোকসভার সচিবালয় (Lok Sabha Secretariate) সেই নির্দেশ কার্যকর না করায় ফয়জল সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে ধরনায় মমতা
কংগ্রেস নেতা (Congress Leader) রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার প্রেক্ষাপটে ফয়জলের আবেদনের শুনানির রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি কাওয়ারাট্টির দায়রা আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। ১৩ জানুয়ারি ফয়জলের সদস্যপদ খারিজ করে লোকসভার সচিবালয়।
সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফয়জল বলেন, লোকসভার সচিবালয় সদস্যপদ খারিজ করে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে। কিন্তু পুনর্বহালের ক্ষেত্রে তারা প্রচুর সময় নেয় আইনি বাধা না থাকলেও। রাহুল গান্ধীর বিষয়টাই দেখুন না। কী ক্ষিপ্রতার সঙ্গে নিম্ন আদালত শাস্তি ঘোষণার পরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধীকে এখন গুজরাত হাইকোর্টে (Gujarat High Court) আবেদন করতে হবে। যদি হাইকোর্ট তাঁকে কোনও নিষ্কৃতি না দেয়, তবে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। তাঁকেও আমার পথই অনুসরণ করতে হবে।
এনসিপি (NCP) নেতা বলেন, কোনও কারণ ছাড়াই লোকসভার সচিবালয় দু’মাস ধরে নানা টালবাহানা করছে। যখনই আমি খোঁজ করছি, তখনই সচিবালয় থেকে বলা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই আমরা নোটিস জারি করছি।
এদিকে নির্বাচন কমিশন লাক্ষাদ্বীপে ফয়জলের লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করে দিয়েছে। সেই ঘোষণাকে তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, একটি ফৌজদারি অবমাননা মামলায় সুরাতের নিম্ন আদালত রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে। ২০১৯ সালে কর্নাটকে লোকসভা ভোটের আগে এক নির্বাচনী সভায় প্রশ্ন তোলেন, সব চোরের পদবিই কেন মোদি হয়। এতে মোদি পদবিধারীদের অবমাননা হয়েছে বলে আদালতে তখন অভিযোগ করেছিলেন গুজরাতের এক বিজেপি নেতা। সেই মামলা ধামাচাপাই ছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে সেটি ফের খুঁচিয়ে তোলা হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাহুল গান্ধী লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি গৌতম আদানির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন লোকসভায়। সেই অস্বস্তি কাটাতেই মামলাটি আবার প্রকাশ্যে আনা হয়। আর সুরাত আদালত এই মন্তব্যের জন্য রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছর কারাদণ্ড দেয়। তাঁকে অবশ্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য ৩০ দিন সময় দিয়েছিল সুরাতের ওই আদালত। কিন্তু তার জন্য অপেক্ষা না করেই পরের দিন লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করে দেয়।
শনিবার রাহুল সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, আমি লোকসভায় পরবর্তীকালে কী বলব, সেই ভয়েই আমার সদস্যপদ খারিজ করার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল।