কলকাতা: চন্দ্রবিজয় সম্পন্ন, এবার সূর্যের পথে পা বাড়াচ্ছে ভারত। আগামী শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে দেশের প্রথম সৌর অভিযান, ‘আদিত্য এল১’ (Aditya L1) লঞ্চ করতে চলেছে ইসরো (ISRO)। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার যান উৎক্ষেপণ হবে বেলা ১১.৫০ মিনিটে। চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) মিশনের সাফল্যে আনন্দের রেশ এখনও কাটেনি ভারতবাসীর, তার মধ্যেই সৌর অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরো।
চন্দ্রযান মিশনের মতো আদিত্য এল১ নিশ্চয়ই সূর্যে অবতরণ করবে না, তা সম্ভবই নয়। ইসরোর পাঠানো মহাকাশযান যাবে ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট ১ (Lagrange Point 1) বা এল ১ পয়েন্ট পর্যন্ত। এই জায়গাটা পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। ওই দূরত্বে হ্যালো অরবিটে (Halo Orbit) গিয়ে ‘সেট’ হয়ে যাবে আদিত্য এল ১ মিশনের মহাকাশযান।
এই মিশনের উদ্দেশ্য কী?
আরও পড়ুন: চাঁদমামার বাড়িতে ছ’ দিন কাটল, প্রজ্ঞানের মেয়াদ আর মাত্র আটদিন
প্রথমত, সূর্যের যতটা সম্ভব কাছে গিয়ে মহাকাশের আবহাওয়া সম্পর্কে গবেষণা চালাবে আদিত্য এল ১। এছাড়াও সূর্যের তাপমাত্রার বিভিন্ন বিষয় যেমন করোনাল হিটিং, করোনাল মাস ইজেকশন, প্রি-ফ্লেয়ার ইত্যাদি বিষয়ে অজানা তথ্য জানার চেষ্টা চলবে।
১৫ লক্ষ কিমি পথ পাড়ি দিতে চার মাস মতো সময় লাগবে আদিত্যের। ইসরো জানিয়েছে, প্রথমে মহাকাশযানটিকে লো আর্থ অরবিটে (Low Earth Orbit) রাখা হবে। এই অরবিট বা কক্ষপথ হবে উপবৃত্তাকার। পরে তার অন বোর্ড প্রোপালশনের সাহায্যে ল্যাগ্রাঞ্জ ১ পয়েন্টের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের মায়া কাটিয়ে ওঠার পর ‘ক্রুজ ফেজ’-এ উন্নীত হবে মহাকাশযানটি। এরপর এল ১ পয়েন্ট চত্বরে বিরাট হ্যালো অরবিটে স্থাপন করা হবে তাকে।
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্টের মাহাত্ম্য কী?
ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট হল এমন জায়গা যেখানে সূর্য এবং পৃথিবীর মতো দুটি মহাজাগতিক বস্তুর অভিকর্ষজ বলের লড়াইয়ে ভারসাম্যে থাকে। এই জায়গাগুলোতে কোনও জ্বালানি ছাড়াই মহাকাশযান এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে, তাকে না সূর্য না পৃথিবী নিজের দিকে টেনে নিতে পারবে। পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে এল১ থেকে এল৫, মোট পাঁচটি এমন স্পট আছে। পৃথিবীর সবথেকে কাছে এল১ এবং এল২, এই দুই জায়গা পর্যবেক্ষণের জন্য ভালো। নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ এল২ পয়েন্টে রয়েছে।