নয়াদিল্লি: ভারতের (India) কি বিনাশকাল আসন্ন? না, কোনও জ্যোতিষীর ভবিষ্যৎবাণী কিংবা পঞ্জিকার গণনা নয়। ভারতের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে প্রবল তাপপ্রবাহ (Heat Waves), ভয়ঙ্কর বন্যা (Heavy Flooding) অথবা অনাবৃষ্টির (Severe Drought) জেরে আকাল (Challenges to Food)। যার ফলে দেশকে এক বিরাট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশে নেমে আসবে ভয়াবহ সংকট।
ভারতের আবহাওয়ায় এমনই বিরূপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রকের শীর্ষ আমলা (Top Bureaucrat of Earth Sciences Ministry) এম রবিচন্দ্রন (M Ravichandran) বলেন, দেশের আবহাওয়া চরম ভাবাপন্ন হতে চলেছে। গ্রীষ্মকালে এত গরম পড়বে, যা অসহনীয় হয়ে উঠবে। আবার শীতকালে চরম শীত পড়বে। প্রতিবছর জলবায়ুর এই পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে এদেশেও তার মারণ প্রভাব পড়তে চলেছে।
জলবায়ু ও পরিবেশের উপর বেঙ্গালুরুতে জি ২০ বৈঠকের (G20 Working Group Meeting) পাশাপাশি এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন রবিচন্দ্রন। এই পরিবেশ পরিবর্তনের ফল হবে মারাত্মক। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই বিপর্যয়ের বলি হবেন। প্রতিবছর মারা যাবেন হাজার হাজার লোক। কৃষি উৎপাদন কমে আসবে। যার শিকার হবেন অগণিত কৃষক। আর্থিক দিক দিয়ে ভেঙে পড়বে দেশের কাঠামো। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের ফলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন জ্বালানি তেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। কারণ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি শুকিয়ে যাবে। অর্থাৎ, তাঁর কথায় ধীরে ধীরে ভারত জলবায়ুর পরিবর্তনের ধ্বংসের দিকে এগচ্ছে।
তিনি বলেন, এখনই দেশকে এর হাত থেকে উদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা করতে হবে। পরিবেশকে রক্ষা ও পরিবর্তন রুখতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে। সরকার এর জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিকল্প শক্তির কথা ভাবছে। যেমন, উপকূলবর্তী বাতাস এবং সামুদ্রিক ঢেউ থেকে বিদ্যুৎ তৈরির পরিকল্পনার কথা শোনান রবিচন্দ্রন।
প্রসঙ্গত, গত গ্রীষ্মে দেশে অসহ্য গরম পড়েছিল। কিছু অংশে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। মারাত্মক তাপপ্রবাহে গমের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যার ফলে একসময় গম রফতানি বন্ধ করতে বাধ্য হয় সরকার। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমদানি করা কয়লার উপর নির্ভর করতে হয় ভারতকে। ইতিমধ্যেই সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিকে জ্বালানি আমদানির কথা বলে রেখেছে, আসন্ন গ্রীষ্মে যাতে ভারতে অন্তত আলোটুকু জ্বলে।
তাপপ্রবাহ ছাড়াও রবিচন্দ্রন বলেন, অতিবৃষ্টি, ভয়ঙ্কর বন্যা অথবা নিদারুণ খরাও আসতে পারে। এ বছর এল নিনো (El Nino) ধাঁচের আবহাওয়াও এদেশে দেখা দিতে পারে বলে পূর্বানুমান তাঁর।