নয়াদিল্লি : নোটবন্দি (Demonitisation) নিয়ে শীর্ষ আদালতে (Apex Court) চলা জনস্বার্থ (PIL) মামলায় আগামী ২ জানুয়ারি চূড়ান্ত রায় ঘোষণার কথা। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণার ঠিক আড়াই ঘন্টা আগে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের যে বোর্ড মিটিংয়ে নোটবন্দি সংক্রান্ত প্রসঙ্গগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল তাতে কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্নমত ছিলেন বোর্ডের সদস্য আর্থিক বিশেষজ্ঞরা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, বোর্ডের ওই বৈঠকে (Board Meeting) বরং দেশে আর্থিক বৃদ্ধির হার আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) সামাল দেওয়ার জন্য নতুন নোট বাজারে আনার যুক্তিতে যেভাবে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা মোটেই বাস্তবোচিত নয় বলেই জানানো হয়েছিল।
পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে জাল নোটের (Fake Note) ব্যবহার ঠেকানোর জন্য নোটবন্দির যে যুক্তি কেন্দ্রীয় সরকারের (Centre)তরফে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা হয়েছিল তা একেবারেই সঠিক নয় বলে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের ওই বোর্ড মিটিংয়ে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ বোর্ড সদস্যদের মতামত ছিল জাল নোটের পরিমাণ দেশের বাজারে চালু নোটের আর্থিক পরিমাণের তুলনায় নেহাতই নগন্য।
পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিল করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister) তাঁর ভাষণে যা বলেছিলেন ঠিক একই যুক্তি সুপ্রিম কোর্টের মামলাতেও সওয়াল করেছিল কেন্দ্র। দেশে কালো টাকার ব্যবহার আটকাতে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। আর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI), কেন্দ্রীয় সরকার তার নোটবন্দির সিদ্ধান্তে যাকে অন্যতম শরিক বলে দাবি করে, তাঁর বোর্ড সদস্যরা নিজেদের আলোচনায় জানিয়েছিলেন, কালো টাকার একটা বড় অংশকেই সোনা বা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় কাজে লাগানো হয়েছে। তাই এই যুক্তিরও কোনও অর্থ নেই।
আবার সন্ত্রাসবাদ (Terrorism) ঠেকাতে নোটবন্দির যে অজুহাত কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হয়েছিল সে প্রসঙ্গে কিন্তু ওই বোর্ডের সভায় কোনও আলোচনাই হয়নি। যার মূল অর্থ, যে সমস্ত যুক্তি সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হয়েছিল তার অধিকাংশই গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় সরকারের সেই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের অন্যতম শরিক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।