পরপর চারদিন বড় পতন সোনার দামে। শুক্রবার বাজারে গয়নার সোনা বা ২২ ক্যারেট সোনা প্রতি ১০ গ্রাম মিলছে ৪৫ হাজার ৮০০ টাকায়। গত ছ’মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে মিলছে সোনা। বড় লগ্নিকারীদের চাহিদার হঠাৎ এই পতনে সোনা বেশ সস্তা হয়েছে । এর ফলে পুজোর মরসুমে মধ্যবিত্তদের মধ্যে গয়না কেনার হিড়িক বাড়বে বলে আশা করছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।
১৩ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০ গ্রাম সোনার দাম নেমেছে প্রায় সাড়ে ন’শো টাকা। ফলে সব মানের সোনার দামই এখন নিম্নগামী। অন্যদিকে এবছরের মার্চ থেকেই বিশ্ব বাজারেও সোনার দাম পড়তে শুরু করে। ওই মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে পাকা সোনার দর উঠেছিল আউন্স পিছু ২০৫০ ডলার। এর পরেই পড়তে থাকে দাম। এরপর জুলাইয়ে পাকা সোনার আউন্স পিছু দাম ১৭০০ ডলারের নীচে চলে যায়। মাঝে সোনার দাম কিছুটা উঠলেও চলতি সপ্তাহে ফের পতন ঘটেছে সোনার।
আরও পড়ুন: সপ্তাহের শেষ দিনে ধস শেয়ার বাজারে, ক্ষতি পাঁচ লক্ষ কোটি
ডলারের তুলনায় টাকার দাম কমে যাওয়া, বিশ্ব জুড়ে চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরেই সোনার এই পতন বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। শীর্ষ মার্কিন আর্থিক সংস্থা ফেড রিজার্ভ সুদ বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ক’দিনের মধ্যেই। ফেড রিজার্ভের কর্ণধার জেরোম পাওয়েল পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, মূল্যবৃদ্ধি রুখতে সুদ বাড়াতেই হবে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, অগাস্টে দেশের খুচরো দামবৃদ্ধি পরিমাণ ছিল ৭ শতাংশ। পরপর তিন মাস অল্প অল্প করে কমার পরে মুল্যবৃদ্ধির হার ফের ৭ শতাংশে পৌঁছে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেনরিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্তারা।
পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার রয়েছে ১০ শতাংশের বেশ খানিকটা ওপরে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ মনিটরি পলিসি কমিটির সভা রয়েছে। ভারতেও রেপো রেট সহ নানা হার আবার বৃদ্ধি প্রায় নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব জুড়েই সোনা বেচছেন বড় লগ্নিকারীরা। তা ছাড়া দামে আরও পতনের আশঙ্কাতেও দ্রুত সোনা বিক্রি করছেন বিনিয়োগকারীরা। তাঁরা মনে করছেন সোনার চাহিদা এখন তলানিতে।
আরও পড়ুন: পুজোর দিনগুলিতে সারারাত চলবে মেট্রো, রইল সময়সূচি
শুক্রবারের এর ব্যতিক্রম হল না। ভারতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রাম ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা, পাকা সোনা বা ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ৫০ হাজারের নীচে। এদিন দাম কমেছে রুপোরও। এক কিলো রুপো মিলছে ৫৬ হাজার ৪০০ টাকায়। পুজোর মুখে সোনার দাম কমায় আমবাঙালি। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মনে করছেন উৎসবের মরসুমে অন্য কেনাকাটা ভুলে মানুষ গয়নাগাঁটি কিনে রাখতে পারেন। আশায় বুক বেঁধেছেন গয়না শিল্পীরা। গয়না তৈরির মজুরিতে ছাড় সহ একাধিক অফারের হাতছানি দিয়ে ব্যবসায়ীরা ভাল বাজারের আশায় রয়েছেন।