কলকাতা: আর্দশ আচরণবিধি চালু হওয়ার পরই রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে (DG Rajeev Kumar) সরিয়ে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার (Rajiv Kumar Election Commissioner of India)। পাশাপাশি গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের স্বরাষ্ট্রসচিবদের সরিয়ে দিল কমিশন। নির্বাচন কমিশন (Election Commission) বলেছে, ভোটের কোনও কাজেই রাজীব কুমারকে ব্যবহার করা যাবে না। পরবর্তী ডিজিকে হবেন, কমিশন কাকে বেছে নেবে, সেটাই এখন দেখার। গত ডিসেম্বর মাসে রাজীব কুমারকে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে বসান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবারই আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে সারা দেশে। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ কর্তাকে সরিয়ে দেওয়া রীতিমতো নজিরবিহীন।
কমিশনের ফুল বেঞ্চ সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিল ভোটের প্রাকপ্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে। তখনই কমিশন বলেছিল, রাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করার দায়িত্ব জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের। কোনও গাফিলতি থাকলে তাঁদের ছেড়ে কথা বলা হবে না। কমিশনের বৈঠকে রাজীব কুমারকেও তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল।
রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। সারদা দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআরে তাঁর নাম রয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সারদা-কাণ্ডে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট্ করে ফেলেন তিনি। ওই মামলায় সিবিআই কয়েক বছর আগে রাজীব কুমারের বাড়িতে এসেছিল তল্লাশি করতে। তার প্রতিবাদে খোদ মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় ধরনায় বসেন দলবল নিয়ে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ অফিসার বলে পুলিশ মহলে পরিচিত।
বিরোধীরা কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder ) বলেন, শুধু ডিজিকে সরালেই হবে না। জেলায় জেলায় রাজীব কুমারের মতো আরও অনেক অফিসার রয়েছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে শাসকদলের অনুগত বলে অভিযোগ রয়েছে। সুকান্ত বলেন, এই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআর আছে। তাঁকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমেছিলেন। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, শুধু উপরের তলার অফিসারদের সরালে চলবে না। নীচুতলার বহু অফিসারের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দহরম মহরম রয়েছে। তাঁরা তৃণমূলের পার্টি অফিসে গিয়েও বসে থাকেন। এই ধরনের অফিসারদের দিয়ে নিরপেক্ষ ভোট সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: ভোটের পরে তৃণমূলের ট্রিটমেন্ট শুরু হবে, হুঁশিয়ারি বিজেপি বিধায়কের
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, এই রাজীব কুমারকে দিয়ে সারদা দুর্নীতির বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার সিবিআই রাজীব কুমারের বাড়িতে এলে তার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। ডিসেম্বর মাসে রাজীব কুমারকে ডিজি করা হয়। সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানদের কীর্তিকলাপকে আড়াল করতে ডিজিকে কাজে লাগানো হয়। সুজন বলেন, কমিশনকে জেলায় জেলায় পক্ষপাতদুষ্ট পুলিশ অফিসারদের সরাতে হবে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, রাজীব কুমারের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। তিনি বিদেশ থেকে দাগী অপরাধীকে তুলে নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু সন্দেশখালির শাহজাহানদের ৫৫ দিন পরেও গ্রেফতার করতে পারেন না। তাঁরও অভিযোগ, জেলায় জেলায় এরকম অনেক রাজীব কুমার রয়েছে। তাঁদের দায়িত্বে রেখে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট সম্ভব নয়।
The Election Commission of India (ECI) has issued orders for the removal of the Home Secretary in six states namely Gujarat, Uttar Pradesh, Bihar, Jharkhand, Himachal Pradesh and Uttarakhand. Additionally, the Secretary of the General Administrative Department in Mizoram and… pic.twitter.com/DxvZPPlbNz
— ANI (@ANI) March 18, 2024
অন্য খবর দেখুন