Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Fourth Pillar | দেশপ্রেম, গণতন্ত্র, অহিংসা, সংবিধানের কথা মোদি–শাহের মুখে বেমানান
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  কৃশানু ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩, ১১:৪১:৪২ পিএম
  • / ১৪৯ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • কৃশানু ঘোষ

চাঁদে পা রেখেছে বিক্রম, ওমনি আরএসএস–বিজেপি, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটিতে আর সামাজিক মাধ্যমে দেশপ্রেমের যাবতীয় ঠিকে নিয়ে নিয়েছেন ভক্তকুল। কাশ্মীরে এই প্রথম তিরঙ্গা ঝান্ডার পুরনো ন্যারেটিভ থেকে চাঁদে বিক্রমের উপর জাতীয় পতাকা লাগিয়ে পত পত করে দোলাচ্ছে ভক্তদের কমজোরি গ্রাফিক্স। খেয়ালই নেই যে চাঁদে হাওয়া নেই, পতাকা পত পত করে ওড়ে না। অবশ্য এ বৈজ্ঞানিক সত্য বোঝাতে গেলেই শুনতে হবে মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। চাঁদে চন্দ্রযান ১ নেমেছিল ২০০৮-এ, এবার আরও বড় সাফল্য। ইসরো পথ চলা শুরু করেছিল নেহরুর হাত ধরে, অন্য কেউ নন আমাদের ঠাকুরের লেখা চিঠি নিয়ে বিক্রম সারাভাই গিয়েছিলেন বিলেতে, গোলওয়ালকর বা সাভারকারের নয়। কিন্তু সমস্ত ইতিহাসের সমস্ত তথ্যকে মুছে দেশপ্রেমের যাবতীয় ঠিকাদারি নিয়ে ফেলেছেন ওই ভক্তের দল। যাঁদের পূর্বপুরুষেরা সমুদ্র পার করলে জাত চলে যাওয়ার নিদান হাঁকতেন, যাঁদের এই সময়ের গুরুজিরা চন্দ্রগ্রহণের সময় ছায়ায় কিলবিলিয়ে ওঠে ব্যাকটিরিয়া বলে নিদান হাঁকেন, কিচ্ছুটি খাওয়া যাবে না, এদিকে ঠিক সময় ধরে ছায়ার অঙ্ক কষে বিক্রম নেমে পড়ল সেই ছায়ার হদিশ পেতে। দেশপ্রেম? কাকে বলে দেশপ্রেম? গান্ধিজিকে সরোজিনী নাইডু শুধিয়েছিলেন, গান্ধিজি হাতে একটা তেরঙ্গা পতাকা ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, শক্ত করে ধরে রাখো, এটাই দেশপ্রেম। গান্ধিবুড়ো এক কথায় সমাধান করেছিলেন সব সংশয়ের, যে পতাকাকে ৫টা গুলি খাওয়ার পরেও শক্ত করেই ধরে ছিলেন গান্ধিবুড়ি মাতঙ্গিনী হাজরা। সেটা ছিল ৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলন, যে আন্দোলনের বিরোধিতা করছেন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। বিরোধিতাই শুধু নয় ইংরেজদের সাহায্য করছেন, ওই আন্দোলনকে দমন করতে, আরএসএস ওই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি, এটাই তো ইতিহাস। দেশপ্রেম? কাদের মুখে শুনছি এ কথা? প্রকাশ জাবড়েকরের দেশপ্রেম? আরএসএস-বিজেপির দেশপ্রেম? পাঁচ পাঁচটা চিঠিতে যাদের নেতা ফিলোজফার গাইড, সাভারকর কাকুতি মিনতি করে মুচলেকা দিয়েছে ইংরেজদের কাছে, যাতে ছত্রে ছত্রে আছে বীর সাভারকারের কাপুরুষতার কাহিনি, কীভাবে ইংরেজদের সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়ে ছাড়া পেতে চেয়েছিলেন আন্দামানের কারাগার থেকে, তারা দেশপ্রেমিক? 

সরসঙ্ঘচালক গোলওয়ালকর ইংরেজদের লিখছেন, কীভাবে ৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের বিরুদ্ধে তারা ইংরেজদের পাশে দাঁড়াতে চায়। সঙ্ঘের প্রত্যেক সদস্যের কাছে নির্দেশ যাচ্ছে এই মর্মে, নির্দেশ যাচ্ছে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগদান না করার। যারা এই নির্দেশ দিচ্ছে, তারা দেশপ্রেমী? যারা মুসলিম লিগের হাত ধরে দেশটাকে দু’ টুকরো করার আবেদন করছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কাছে, তারা দেশপ্রেমিক? তাদের কাছ থেকে আমাদের দেশপ্রেম শিখতে হবে যারা জওয়ানদের লাশের ওপর দিয়ে নির্বাচনী সাফল্য আনে, আমার চেষ্টা করে? যারা ৫৩ বছর জাতীয় পতাকা তাদের সদর দফতরে তোলেনি, তুলেছে ভাগওয়া ঝান্ডা তারা আজ জাতীয় পতাকার কথা বলছে। আম্বেদকর, সংবিধানের জন্য তৈরি গণপরিষদ নিয়েছিল এই ত্রিবর্ণ জাতীয় পতাকার সিদ্ধান্ত। কী ছিল তখন এই আরএসএস-এর ভূমিকা? তাদের পত্রিকা দ্য অর্গানাইজার-এ তারা লিখেছিল, “The people who have come to power by the kick of fate may give in our hands the tricolour but it will never be respected and owned by Hindus. The word three is in itself an evil, and a flag having three colours will certainly produce a very bad psychological effect and is injurious to a country.” লিখেছিল হিন্দুরা কখনও এই ত্রিবর্ণ পতাকাকে মেনে নেবে না, তিন সংখ্যাটাই হল অশুভ, তিনটে রং দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে। হ্যাঁ, এ কথা আরএসএস-এর মুখপত্রে লেখা হয়েছিল, তারা আজ জাতীয় পতাকার কথা বলছে, তারা জাতীয় পতাকার সম্মান অসম্মান নিয়ে কথা বলছে? গোলওয়ালকর তাঁর বই বাঞ্চ অফ থটস-এর ড্রিফটিং ড্রিফটিং শিরোনামে লিখছেন, “Our leaders have set up a new flag for our country. Why did they do so? It is just a case of drifting and imitating. Ours is an ancient and great nation with a glorious past. Then, had we no flag of our own? Had we no national emblem at all these thousands of years? Undoubtedly we had. Then why this utter void, this utter vacuum in our minds?” তিনি বলছেন আমাদের নেতারা যে নতুন পতাকা তৈরি করলেন তা মানুষের নজর সরিয়ে দেওয়ার জন্য, আমাদের কি অন্য কোনও পতাকা ছিল না? নিশ্চয়ই ছিল। আসলে তিনি ওই ভাগওয়া ঝান্ডার কথা বলছেন। তিনি হিন্দুরাষ্ট্রের ধারণা থেকেই কথাগুলো বলছেন, এদের কাছ থেকে জাতীয় পতাকার মান সম্মানের কথা শুনবে দেশের অন্নদাতারা? 

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | চলো দিলদার চলো, চাঁদ কে পার চলো 

বাবরি মসজিদ ভাঙার জন্য যেদিন গিয়েছিল এই আরএসএস-বিজেপির দল, সেদিন কি জাতীয় পতাকা নিয়ে গিয়েছিল? না, যায়নি, হাতে ছিল গেরুয়া ঝান্ডা। এইখানেই তফাত, আমাদের অন্নদাতারা তাদের দলের, সংগঠনের, ধর্মের যে পতাকাই লাগান না কেন, সঙ্গে জাতীয় পতাকা নিতে ভোলেননি। সেই অন্নদাতারা বলবেন জাতীয় পতাকার কথা, আরএসএস–বিজেপির কাছ থেকে বকওয়াস শুনব কেন? এই তো ক’দিন আগে ওই দিনেই ২৬ তারিখেই দিলু ঘোষ উল্টো জাতীয় পতাকা তুলে দিলেন, জানা নেই যাদের পতাকার কোন দিক সোজা কোন দিক উল্টো তারা জাতীয় পতাকা নিয়ে জ্ঞান দেবে? যে দলের প্রধানমন্ত্রী যোগাসনে বসে পতাকা দিয়ে ঘাম মোছে তারা দেশদ্রোহী, তারা সংবিধান বিরোধী। তাদের হাতে জাতীয় পতাকা মানায় না। এই রাজ্যে এই আরএসএস-বিজেপির নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, যিনি চিঠি লিখে কীভাবে ৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে ব্যর্থ করা যায় তার কথা লিখেছিলেন, সেই শ্যামাপ্রসাদের উত্তরসূরিরা আমাদের শেখাবে দেশ, দেশপ্রেম, জাতীয় পতাকা? কারা অহিংসার কথা বলবে? যাদের গুরুদেবরা জুগিয়েছিল অর্থ ইতালিয়ান বেরেত্তা ৯ এমএম পিস্তল কিনতে, যার গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাবে এক বৃদ্ধ, যাঁকে দেশ বলে জাতির জনক। সেই জঘন্য অপরাধীর মূর্তিতে যারা মালা দেয়, নাথুরাম গডসেকে যারা পুজো করে, তাদের কাছ থেকে অহিংসা শিখবে দেশের অন্নদাতারা? হাঁটু পর্যন্ত খেটো ধুতি পরা এক অশক্ত বৃদ্ধের মৃত্যুতে যারা উল্লাস করল, তারা শেখাবে অহিংসার কথা? যিনি মরার আগে কেবল বলতে পেরেছিলেন হে রাম, যাঁর প্রতিটা সন্ধ্যায় অবশ্য পাঠ ছিল রামধুন, যাদের পরিকল্পনায় ৯ এমএম গুলি তাঁর বুকে বেঁধে, ফিনকি দিয়ে বের হয় রক্ত, তারা রামভক্ত? তারা অহিংস? এরা গণতন্ত্রের কথা বলছে? গণতন্ত্র? কে বিশ্বাস করে আরএসএস? আরএসএস প্রতিষ্ঠাতা নিজে লিখে গেছেন হিটলারের মতো সামরিক শাসনের প্রয়োজনীয়তার কথা। যাদের আইকন হল হিটলার, মুসোলিনি, যাদের ফ্যাসিবাদের শিকড় ইতালির থেকে নেওয়া, যারা পার্মানেন্ট সলিউশন টু দ্য জিউইস কোয়েশ্চেন-এর বদলে পার্মানেন্ট সলিউশন অফ দ্য মুসলিম কোয়েশ্চেন নিয়ে মত্ত তারা বলবে গণতন্ত্রের কথা? ফ্যাসিস্ট দানব বলবে সবার সমান অধিকারের কথা? 

যারা গরু ছাগল ভেড়ার মতো সাংসদ বিধায়ক কিনে বেচে সরকার তৈরি করে, বিরোধীদের সরকার ভেঙে দেয়, তারা বলবে গণতন্ত্রের কথা? কোন মুখে? সূর্য ওঠার আগে রাজভবনে দল ভাঙিয়ে শপথ নেওয়ার পরের দিন যাদের মুখ পুড়েছে, তারা বলছে গণতন্ত্রের কথা? অতিমারির মধ্যে বিরোধী দলের সরকার ভাঙার জন্য যারা এমএলএ কিনে রেখে দেয় রিসর্টে, নির্বাচিত সরকার ফেলে দেয়, তারা গণতন্ত্রের কথা বলবে? যারা দেশের কোটি কোটি মানুষকে আড়ালে রেখে একের পর এক দেশের সম্পদ বেচে দিচ্ছে, তারা গণতান্ত্রিক? কোনও রকম আলোচনার সুযোগ না দিয়ে তড়িঘড়ি করে তিনটে কৃষি বিল পাশ করিয়ে যারা কৃষিক্ষেত্রকে দালাল কর্পোরেট হাউসের হাতে তুলে দিতে চায় তারা গণতন্ত্রের কথা বলবে আর আমরা শুনব? কেন? আজ বাধ্য হয়ে সে বিল ফেরত নিয়েছে, ক’দিন পরেই আবার নতুন করে আনবে বলে। এরা সংবিধানের কথা বলছে? দেশের মাথায় যারা মনুবাদকে চাপাতে চান, তাঁরা, তাঁদের মহান নেতা ক্ষণে ক্ষণে বলেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ! কিসের সবকা সাথ? মনুস্মৃতিতে সাফ বলা আছে মাথায় থাকবে ব্রাহ্মণ আর রাজপুতেরা, ব্যবসা করবে বৈশ্যরা আর সেবা করবে শূদ্ররা, কীভাবে? তাদের ঘরের মেয়েদের আখের খেতে নিয়ে গিয়ে চিৎ করে পেড়ে ফেলা হবে, ধর্ষণ করা হবে, হত্যা করা হবে, তারপর পুলিশি পাহারায় জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। উচ্চবর্ণের সেই জানোয়াররা মিছিল করবে জাতীয় পতাকা হাতে, এটা দেশ না দেশপ্রেম? এই সরসংঘচালক গোলওয়ালকর তাঁর বাঞ্চ অফ থটস-এ লিখছেন, “জাতিভেদ প্রথা আসলে দেশের দুর্বলতা নয়, দেশের শক্তি, জাতিভেদ প্রথা না থাকলে আমাদের দেশ কবেই বহিরাগত শত্রুর কাছে নতিস্বীকার করত।” মানে এরা কেবল হিন্দুরাষ্ট্রই চায় না, এরা মনুবাদ চায়, চতুর্বণের প্রতিষ্ঠা চায়, এরা আমাদের সংবিধানে যে জাতিভেদ প্রথা তুলে জাতি ভাষা বর্ণ লিঙ্গ নির্বিশেষে মানুষের সমানাধিকার দেওয়া হয়েছে, তার অবসান চায়। যে সংবিধানের মূল কাঠামোকে আমরা রক্ষা করার কথা বলি আজ সেই সংবিধানকে ধ্বংস করার কাজে নেমেছে এই মোদি–শাহ–যোগীর সরকার। জওহরলাল নেহরু মন্দির বানাননি, ইসরো তৈরি করেছিলেন, সেই ইতিহাসের গতিপথ ধরেই আজকের সাফল্য।  

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team