শিলিগুড়ি: নর্থ ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের (NFR) দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে বা ডিএইচআর-এর (DHR) টয়ট্রেন (Toy Train) পরিষেবায় অতিরিক্ত চারটি জয়রাইড (Joy Ride) ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত। একইসঙ্গে চারটি ট্রেনে অতিরিক্ত ফার্স্ট ক্লাস এসি চেয়ার কার সংযোজন করা হবে।
টয়ট্রেন চিরকালই দেশী-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। পর্যটকদের দার্জিলিঙে (Darjeeling) আসার মূল কারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে টয়ট্রেনে চড়া উপভোগ করা। আগামী মার্চ মাস থেকেই শুরু হয়ে যাবে পর্যটন মরশুম। আর এই পর্যটন মরশুমের কথা মাথায় রেখেই টয়ট্রেনকে ঘিরে একগুচ্ছ পরিকল্পনা উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের।
আরও পড়ুন: WBCHSE: উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ২০ দফা নির্দেশিকা
ব্রিটিশ আমলে সমতল থেকে পাহাড়ে টয়ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর (UNESCO) তরফ থেকে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের (World Heritage) শিরোপা দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর থেকে সেই শিরোপা ধরে রাখতে অবিরাম যুদ্ধ চালাতে হয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে। টয়ট্রেনের হাত ধরে উত্তরের পাশাপাশি রাজ্যের পর্যটন শিল্পে এসেছে আমূল পরিবর্তন।
কিন্তু বিগত বছরগুলোতে করোনা আবহের জেরে টানা এক বছরের থেকে বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল হেরিটেজ শিরোপাধারী এই ট্রয়ট্রেন পরিষেবা। যার ফলে অনেকটাই চিন্তায় পড়েছিল রেল কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পর্যটন মহলও। করোনার প্রথম ঢেউ থেকে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে থমকে গিয়েছিল এই বিখ্যাত টয়ট্রেন পরিষেবা। তবে ধস এবং টানা চলতে থাকা বনধের কারনে এবং উপরন্ত করোনা আবহের জেরে ইউনেস্কোর প্রদান করা সেই হেরিটেজ শিরোপাটি ধরে রাখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে এক সময়ে যথেষ্ট সংশয় দেখা দিয়েছিল।
সেই শিরোপা ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ একের পর এক পরিকল্পনা নেয়। যার মধ্যে ছিল পাহাড়ের স্টেশনগুলোকে সাজিয়ে তোলা। ঘুমের রেল মিউজিয়ামকে অত্যাধুনিক রূপ দেওয়া এবং বিশেষ করে স্টিম ইঞ্জিনে সঙ্গে ডিজেল ইঞ্জিন সহকারে জয়রাইডের ব্যবস্থা করা। কিছুদিন আগেই এই টয় ট্রেনে সংযোজিত হয়েছে এসি ফার্স্ট ক্লাস কোচ।
আগামী ১ মার্চ ২০২৩ থেকে ৩০শে জুন ২০২৪ পর্যন্ত দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে চারটি স্পেশাল জয়রাইড চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি জয়রাইডেই একটি অতিরিক্ত ফার্স্ট ক্লাস কোচ সংযোজন করা হবে। টয়ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি থেকে চললেও পর্যটকরা মূলত দার্জিলিং থেকে ঘুম হয়ে আবার দার্জিলিং ফেরা পর্যন্ত জয়রাইডগুলোই ইদানীং বেশি পছন্দ করছে । সেই কারণে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের যাত্রী-সংখ্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। কম যাত্রীর জন্য ১ মার্চ থেকে ১০ জুলাই নিউ জলপাইগুড়ি-দার্জিলিংয়ের মধ্যে একটি এসি স্পেশাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
করোনার পর থেকে টয়ট্রেনের মাধ্যমে রেলের রোজগারও অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। টয়ট্রেনকে দেশী বিদেশি পর্যটকদের কাছে আরও জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে একে ঘিরে একের পর এক বিভিন্ন পরিকল্পনা সফল হওয়ায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তকমা ধরে রাখতে আর কোন সংশয়ই থাকছে না রেল কর্তৃপক্ষের।