নয়াদিল্লি: সিবিআইয়ের কাজ অপরাধ সংক্রান্ত তদন্ত করা, রেল দুর্ঘটনার তদন্ত নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সোমবার চিঠি লিখে এই কথা জানালেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। চারপাতার এক চিঠিতে খাড়্গে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন মারণ সতর্কতা সত্ত্বেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে। রেলে শূন্যপদ পূরণের প্রতিশ্রুতির কী হল, মোদির কাছে জানতে চেয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। প্রসঙ্গত, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রবিবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন মোদিকে চিঠি খাড়্গের।
খাড়্গে লিখেছেন, আইন প্রয়োগ সংক্রান্ত কোনও সংস্থা কী করে প্রযুক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতার তদন্ত করতে পারে? সেই গ্রহণযোগ্যতা কোথায় তাদের? সিবিআই মানে অপরাধ সংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা। রেল দুর্ঘটনার তদন্ত তাদের উপর বর্তায় না। তাছাড়া সিবিআইয়ের হাতে রেলওয়ে নিরাপত্তা, সিগন্যালিং ত্রুটি, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ব্যবস্থা বা প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞ নেই। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এই বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব মানতে রাজি নন যে, গোড়ায় গলদ রয়েছে।
আরও পড়ুন: Coromandel Express| ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ ফিরল বাদুড়িয়ায়
খাড়্গে আরও বলেছেন, রেলমন্ত্রীর দাবি তিনি মূল কারণ খুঁজে পেয়েছেন। অথচ ফের নিজেই সিবিআই তুলছেন। যুক্তি দিয়ে মল্লিকার্জুন লিখেছেন, কানপুরে একটি ট্রেন বেলাইন হয়ে দেড়শো লোকের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৬ সালের ওই ঘটনায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের কথা বলেছিলেন। ওই ঘটনার পর ২০১৭ সালের একটি নির্বাচনী জনসভায় আপনি নিজেই দাবি করেছিলেন সেখানে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ২০১৮ সালে এনআইএ সেই তদন্ত গুটিয়ে নেয়। এমনকী চার্জশিটও জমা দেয়নি। দেশ এখনও অন্ধকারে যে, ওই ১৫০ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী কে ছিল? খাড়্গে জবাব চেয়েছেন মোদির কাছে।
ফলে এবারেও এজেন্সির কোর্টে বল ঠেলে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনা আমাদের ২০১৬ সালের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। খাড়্গে স্পষ্ট ভাষায় কেন্দ্রকে তোপের মুখে বসিয়ে লিখেছেন, ওড়িশার দুর্ঘটনা আমাদের সকলের চোখ খুলে দিয়েছে। রেলমন্ত্রী নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে যেসব বড় বড় কথা বলতেন, তার সবটাই যে অন্তঃসারশূন্য তা বোঝা গিয়েছে। সাধারণ যাত্রীদের কাছে এটা খুবই উদ্বেগের যে রেলে যাতায়াতে কোনও সুরক্ষা নেই। এই অবস্থায় সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ লোকচক্ষুর সামনে নিয়ে আসা।
খাড়্গের আরও অভিযোগ, রেলের ন্যূনতম প্রয়োজনকে উপেক্ষা করে, তার শক্তি না বাড়িয়ে, কেবল উপর উপর রংচং মাখিয়ে খবরে থাকাই সরকারের উদ্দেশ্য ছিল। তাঁর চিঠিতে খাড়্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে ১১ দফা প্রশ্ন রেখেছেন। প্রায় দুবার পূর্ণ মেয়াদ সরকারে থেকেও কেন এখনও রেলে ৩ লক্ষ শূন্যপদে লোক নিয়োগ হয়নি, প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি।