কলকাতা: দু’দিন টানা বর্ষণের জেরে রাজ্যের নানা প্রান্তে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কোথাও জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। আবার কোথাও মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে। প্রবল বৃষ্টি ও বিভিন্ন বাঁধ থেকে জল ছাড়ায় রাজ্যে হাওড়া, হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। নদীর বাঁধ ভেঙে বহু এলাকায় জলের তলায় চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ বুধবার আকাশপথে হাওড়া ও হুগলির প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- কাবুলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়ির সামনে আত্মঘাতী জঙ্গি হানা, বিস্ফোরণের পর চলে গুলি
দুই জেলার উদয়নারায়ণপুর, খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তিনি। পরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে গত ২৮ ও ২৯ জুলাই রাজ্যের নানা প্রান্তে টানা বৃষ্টি চলেছিল। টানা দু’দিন দুর্যোগের ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান-সহ দক্ষিণবঙ্গের আরও কয়েকটি জেলায় ঘরের দেওয়াল ভেঙে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোট ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে দুর্ঘটনায় মৃতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অন্যান্য কোনও ক্ষতি হলেও তা রাজ্য সরকারের তরফে বিবেচনা করে দেখা হবে।
আরও পড়ুন- বিল গেটস ও মেলিন্ডার আনুষ্ঠানিক বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পন্ন
হুগলির খানাকুলে বেশ কিছু জায়গায় জল আরও বেড়েছে। কিছু জায়গায় রাস্তা জলের তলায় চলে যাওয়ায় যাতায়াতে বিঘ্ন হচ্ছে। ৬০ থেকে ৬৫টি গ্রাম পুরোপুরি জলমগ্ন। খানাকুলে খোলা হয়েছে ৮০টি ত্রাণশিবির। উঁচু রাস্তায় ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছে অনেক পরিবার।পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে ঘাটাল শহরে জল নামেনি। চরম ভোগান্তি বাসিন্দাদের। নৌকায় করে যাতায়াত করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন- মুক্তির আগেই ফের গ্রেফতার শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা
মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্লাবিত জেলাগুলির থেকে নির্বাচিত মন্ত্রীদের সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন এলাকার কী পরিস্থিতি তা সরেজমিনে দেখে একটি রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে মন্ত্রীদের। কোন এলাকায় কত জল জমছে তার ওপর নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারই ঘাটালের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে করেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। মঙ্গলবার উদয়নারায়ণপুর ও বুধবার খানাকুল যাবেন সৌমেন।
আরও পড়ুন: পার্ক হোটেল ও এইচএইচআই-য়ে মদ পরিবেশনে নিষেধাজ্ঞা
নবান্ন সূত্রে খবর, দু’দিনের দুর্যোগে বিদ্যুৎপিষ্ট হয়ে, দেওয়াল-বাড়ি ভেঙে বাঁকুড়ায় চারজন, কালিম্পংয়ে দুজন, হাওড়ায় একজন, মুর্শিদাবাদে একজন, পশ্চিম বর্ধমানে একজন, পূর্ব বর্ধমানে একজন, পশ্চিম মেদিনীপুরে দুজন, পুরুলিয়ায় তিনজন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যে ৩০৫টি ত্রাণ শিবির চলছে। সেখানে রয়েছেন ১৮ হাজার ৮৩৩ জন মানুষ। ৩৯ হাজার ৩৮০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে।