কলকাতা: মৌচাকে ঢিল মেরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’কে মোদি ইন্ডিয়া মুজাহিদিন কিংবা পিএফআইয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বৈঠকে তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের সঙ্গেও ইন্ডিয়ার নাম রয়েছে। পিএফআইয়ের সঙ্গেও ‘ইন্ডিয়া শব্দটি রয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’ নাম রাখলে সব কিছু হয়ে যায় না।
মোদি একথা বলার পরই কংগ্রেস তৃণমূল সহ ‘ইন্ডিয়া’র বিভিন্ন শরিক ময়দানে নেমে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেয়ে যায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্রের মতো তৃণমূলের একাধিক সাংসদের কটাক্ষে ভরা নানা মন্তব্য। বিকেলে কলকাতা রাজভবনে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বেরিয়ে আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হয়ত নামটা ভালো লেগেছে তাই এই সব বলছেন। ব্যঙ্গের সুরে মমতার মন্তব্য, দেশের জনগণ ‘ইন্ডিয়া’ নামটাকে গ্রহণ করেছে। ভারতীয় দল যখন কোনও খেলায় মাঠে নামে তখন সবাই ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া বলে চিৎকার করে। তখন কি কেউ ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বলে? আমাদের দেশের নাম ইন্ডিয়া, আমাদের মাতৃভূমির নাম ইন্ডিয়া। প্রধানমন্ত্রী যতই ইন্ডিয়া নামের বিরুদ্ধে কটূক্তি করুক না কেন, এর থেকে বোঝা যায় তাঁর এই নামটা বেশ পছন্দ হয়েছে।
টুইটে রাহুল বলেন, আপনি আপনাদের যে নামেই ডাকুন, মোদিমশাই, আমরা ইন্ডিয়া (আইএনডিআইএ)। মিস্টার মোদি যতই এই সব কথা বলুন, আমরা মণিপুরবাসীর চোখের জল মোছাব। সব মানুষের জন্য আমরা প্রেম ও শান্তি ফিরিয়ে আনব। মণিপুরে আমরা ইন্ডিয়া নামের নতুন অর্থ গড়ে তুলব। এইদিন প্রধানমন্ত্রী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তাকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, আমরা ইন্ডিয়ার কথা বলছি আর প্রধানমন্ত্রী অপ্রাসঙ্গিক ভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কথা বলছেন। ডেরেক বলেন, মণিপুর সংকট থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য ‘ইন্ডিয়া’কে সন্ত্রাসবাদী গোষ্টীর সঙ্গে তুলনা করেছেন মোদি। সিপিএমের আইনজীবী সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, মোদির এই বক্তব্য দেশবাসীর অপমানের শামিল।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের যে এমন প্রতিক্রিয়া হবে, তা বিজেপি ধারণা করতে পারেনি। সেই কারণে মোদির সমর্থনে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজেপির তরফে তেমন কোনও টুইট সমাজ মাধ্যমে চোখে পড়েনি। এক কংগ্রেস নেতা বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী একাই টিম ইন্ডিয়ার অনেকটা প্রচার করে দিলেন, তাকে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন কিংবা পিএফআইয়ের সঙ্গে তুলনা করে। অন্যদিকে মণিপুর ইস্যুতে এবার পথে নামার সিদ্ধান্ত নিল মহিলা তৃণমূল। আগামী একমাস রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করলেন মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattyachriya)।