রাঁচি: ভারতের সংবাদমাধ্যমের কড়া সমালোচনা শোনা গেল প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনার মুখে৷ তাঁর অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমগুলি পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, অ্যাজেন্ডা নির্ভর খবর করে এবং ঠিকমতো তথ্য পরিবেশন করে না৷ তাঁর মতে, সোশাল মিডিয়া এবং টিভি চ্যানেলগুলি বিতর্ক সভার নামে ক্যাঙ্গারু কোর্ট চালাচ্ছে৷ যা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে খেদ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি৷ বিজেপি থেকে সাসপেন্ড হওয়া নূপুর শর্মাকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ এবং তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আইনজীবী মহল৷ পয়গম্বরকে নিয়ে বির্তকিত মন্তব্যের পর দেশে যে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল তার দায় একমাত্র নূপুরের ঘাড়ে চাপিয়ে দেশবাসীর কাছে তাঁকে ক্ষমা চেয়ে নিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ তারপরই সোশাল মিডিয়া জুড়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের আক্রমণ করা হয়৷
দেশের বিচারব্যবস্থা এবং বিচারপতিদের উপর সোশাল মিডিয়ার ক্রমবর্ধমান আক্রমণের বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন প্রধান বিচারপতি৷ শনিবার রাঁচিতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে৷ বিচারপতিরা হয়ত কিছু বলছেন না৷ কিন্তু এটা আমাদের অক্ষমতা বা দূর্বলতা বলে মনে করবেন না৷ নতুন মিডিয়া টুলগুলির প্রসার ও প্রচারের অনেক সুযোগ রয়েছে৷ কিন্তু তারা ঠিক এবং ভুল, ভালো এবং খারাপ এবং সত্যি এবং ভুয়োর মধ্যে তফাত করতে পারে না৷’ এরপরই টিভি চ্যানেলগুলিকে একহাত নেন প্রধান বিচারপতি৷ তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি মিডিয়া ক্যাঙ্গারু কোর্ট চালাচ্ছে৷ ঠিকমতো তথ্য পরিবেশন ছাড়াই আদালতের রায় নিয়ে কাঁটাছেড়া হচ্ছে৷ যা গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর৷’
আগামী মাসেই প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন এন ভি রমনা৷ তার আগে মিডিয়াকে তাদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিতে চাইলেন তিনি৷ রমনার মতে, প্রিন্ট মিডিয়া তবুও কাজের প্রতি কিছুটা দায়িত্বশীল৷ কিন্তু বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যম বিন্দুবিসর্গ দায়বদ্ধতা দেখায় না৷ সবচেয়ে খারাপ সোশাল মিডিয়া৷ তাই এই মিডিয়াকে আত্মনিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি৷ তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার পক্ষপাতমূলক খবর গণতন্ত্রকে দূর্বল করে দিচ্ছে৷ এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে বিচার প্রক্রিয়ার উপর৷ দেশের মানুষের শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে বৈদ্যুতিন মিডিয়ার কাজ করা উচিত৷’