রাত পোহালেই ভাইফোঁটা। বাংলাজুড়ে আগামীকাল পালিত হবে ভাইফোঁটা। ভাই বা দাদার মঙ্গলকামনা করে কপালে ফোঁটা দেবেন বোন কিংবা দিদি। অনেকসময়ে রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও ভাইফোঁটায় পাতানো দাদা কিংবা ভাইকেও ফোঁটা দেন মেয়েরা। ভাইবোনের শাশ্বত সম্পর্কের প্রতীক ভাইফোঁটার উৎসব। ভাইয়ের হাতে রাখি পরানো বহুল প্রচলিত এক উৎসব। ভাইফোঁটাও এধরনেরই এক উৎসব।
সারা ভারতজুড়ে পালিত হয় ভাইফোঁটার উৎসব। এমনকি ভারতের বাইরে নেপালেও রীতিমতো ঘটা করে পালিত হয় ভাইফোঁটা। রীতি এক হলেও এই উৎসবের নাম এলাকা বিশেষে ভিন্ন। যেমন, পশ্চিম ভারতে ভাইফোঁটা ‘ভাইদুজ’ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া মহারাষ্ট্র, গোয়া, কর্নাটকে ভাইফোঁটার উৎসব ‘ভাইবিজ’ নামে পরিচিত। আর নেপালে কিংবা দার্জিলিংয়ে ভাইফোঁটার উৎসবকে বলা হয় ‘ভাইটিকা’।
ভাইফোঁটার উৎসবের আর একটি নাম রয়েছে। তা হল যমদ্বিতীয়া। ভাইফোঁটাকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে নানান কাহিনি। তবে যে কাহিনিটি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত তা হল ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিনে যমকে ফোঁটা দিয়েছিলেন তাঁর বোন যমুনা। একারণে এই উৎসব ‘যমদ্বিতীয়া’ হিসেবেও পরিচিত।
তবে কীভাবে ভাইফোঁটার প্রচলন হল তা নিয়ে নানা মুনির নানান মত। এমনই একটি মত হল নরকাসুরকে বধ করার পরে শ্রীকৃষ্ণকে ফোঁটা দিয়েছিলেন সুভদ্রা। শ্রীকৃষ্ণের কপালে ফোঁটা দিয়ে সুভদ্রা তাঁকে মিষ্টি পরিবেশন করেন।
আবার আর একটি কাহিনিও প্রচলিত রয়েছে ভাইফোঁটাকে ঘিরে। যেমন, চতুর্দশ শতাব্দীতে লেখা ‘দীপোৎসবকল্প’ নামনে একটি পুঁথি থেকে জানা যায়, জৈনধর্মের প্রচারক ছিলেন মহাবীর বর্ধমান। তাঁর মৃত্যুর পরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন নন্দীবর্ধন। শোকার্ত রাজাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য তাঁর বোন অনসূয়া ভাইকে প্রবোধ দিয়ে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করেন। রাজার কপালে বোন অনসূয়া পরিয়ে দেন রাজতিলকও। এই ঘটনা আড়াই হাজার বছর আগের। সেহিসেবে ভাইফোঁটা অতি প্রাচীন এক উৎসব।