কলকাতা: এসে গিয়েছে বড়দিন। রাত ফুরোলেই ক্রিসমাস (Christmas)। ডিসেম্বরের শেষে এসে শীত (Winter) থাকুক, বা না থাকুক, বাঙালি বড়দিনে কেক খাবেই। কলকাতার ক্রিসমাস বললে মূলত দু’টি নামই সবার আগে মনে আসে। একটা হল পার্কস্ট্রিট (Park Street), আর অপরটি বো বারাক (Bow Barracks)। ক্রিসমাসের দিন পার্কস্ট্রিটে হাঁটলে যেমন কলকাতার এক অন্যরূপ চোখে পড়ে, তেমনই বো বারাকেরও আছে সেই রকমই একটা আলাদা ক্রিসমাস স্পেশাল ফিলিংস। বড়দিনে কেক কিনতে যেমন লোকজন ধর্মতলার নিউ মার্কেটে নাহুমস (Nahoum and Sons) ছোটেন, তেমনই কেক কেনার জন্য অন্যতম ডেস্টিনেশন মধ্য কলকাতার বো বারাক অঞ্চল।
সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ (Central Avenue) সংলগ্ন বৌবাজার (Bow Bazar) পুলিশ থানার ঠিক পিছনেই এক চিলতে গলি, চলে গিয়েছে হেয়ার স্ট্রিট (Hare Street) পর্যন্ত। ওটাই হল বো বারাক। এখানে আসতে গেলে সোজা মেট্রোয় উঠে পড়তে হবে। নামতে হবে সেন্ট্রাল কিংবা চাঁদনি মেট্রো স্টেশন (Central or Chandni Chowk Metro Station), তারপর মিনিট দু-তিনেকের হাঁটা। লাল ইঁটের তৈরি ছটা ব্লকের বিল্ডিং চোখে পড়বে এখানে এলে। বোঝাই যাবে ব্রিটিশ আমলের ইতিহাস বিজড়িত কলকাতার এই স্থান। বলা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যদের থাকা ও রসদ সরবরাহের জন্য তৈরি হয়েছিল এই স্থান।
আরও পড়ুন: Saharukh Trina Bollywood: কিং খান তাঁর হাতে চুমু খেয়েলিন, এবার তিনি উড়ে গেলেন মুম্বই….
ব্রিটিশরা ভারত ছেড়েছে অনেকদিন হল, কিন্তু বো বারাকের ইতিহাস আজও আছে। ক্রিসমাস ও ইংরেজি নববর্ষ (Christmas and English New Year) এলে সেসব ইতিহাস আবার জেগে ওঠে নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে। ব্রিটিশ সৈন্যরা যখন ভারত ছেড়ে নিজেদের দেশে পাড়ি দেয়, তখন থেকেই অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা এখানে বাস করছেন। পরিসংখ্যান বলছে, ১৩২টি পরিবারের বাস এখানে, ৮০ শতাংশ লোকজনই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান। নিউ ইয়ারেও বো বারাক সেজে ওঠে ঠিকই, কিন্তু কলকাতায় ক্রিসমাস সেলিব্রেশনের (Christmas Celebration) কথা উঠলে বো বারাকের নাম উঠে আসে।
আর কেকের কথা বললে, আরেকটা গল্প না বললেই নয়। বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে কেক তৈরি করছেন এখানে বসবাসরত অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারগুলি (Anglo-India Families)। বড়দিনে এখানে যে কেক তৈরি হয়, তা আদতে তৈরি হয় পরিবারের আত্মীয়দের দেওয়ার উদ্দেশ্যে। ক্রিসমাসে কেক (Christmas Cake) বিনিময়ের পর যা বাঁচে, তাই বিক্রির উদ্দেশ্যে পসরা সাজানো হয়। বছরের অন্য সময়ে বো বারাকে এলে ব্রিটিশদের প্রাচীন ইতিহাসের কথা মনে পড়বে আর বড়দিনের সময় এলে বুঝবেন ক্রিসমাস সেলিব্রেশন কাকে বলে।