নয়াদিল্লি: গুজরাতের (Gujarat) মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার শপথ নিতে চলেছেন ভূপেন্দ্র প্যাটেল (Bhupider Patel)। আগামী ১২ ডিসেম্বর, সোমবার দুপুর ২টোর সময় শপথ নেবেন প্যাটেলের। ভূমিপুত্র মোদি-শাহের রাজ্যে ঐতিহাসিক জয়ে পশ্চিমবঙ্গের সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের রেকর্ড স্পর্শ করল বিজেপি। ভূপেন্দ্রর শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) এবং অমিত শাহ (Amit Shah)। অন্যদিকে, হিমাচলে (Himachal Pradesh) কংগ্রেসের (Congress) মুখ্যমন্ত্রী পদে কে বসতে চলেছেন, তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী পদের দৌড়ে রয়েছেন, প্রতিভা সিং, সুখবিন্দর সিং সুক্কু এবং মুকেশ অগ্নিহোত্র।
হিমাচলে জয় নিয়ে নিশ্চিত থাকলেও বিজেপির বিধায়ক কেনাবেচার আশঙ্কা মন থেকে সরাতে পারছে না কংগ্রেস। ছত্তিশগড়ের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বাঘেল বৃহস্পতিবার সেই আশঙ্কা করেই বলেন, আশা করি আমরাই হিমাচলে সরকার গঠন করব। বিজয়ী বিধায়কদের ছত্তিশগড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সে সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। বাঘেল আরও বলেন, এখানে তাঁদের আনা হচ্ছে না। তবে দল বিজয়ী বিধায়কদের নজরে রাখবে। কারণ, বিজেপি সবকিছু করতে পারে এবং যে কোনও স্তরে নামতে পারে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থায় জানা গিয়েছে, কংগ্রেসি রাজত্ব রাজস্থান বা ছত্তিশগড় নয়, কংগ্রেস নবনির্বাচিত বিধায়কদের চণ্ডীগড়ে নিয়ে যেতে পারে। কারণ, জয়ের পরেও বিজেপিকে বিশ্বাস করতে পারছে না তারা।
আরও পড়ুন: Gujarat Election Results: গুজরাতে কংগ্রেসের ভোট কাটছে আপ, দাবি বিজেপির
এই পরিস্থিতি ম্যানেজ করতে কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেল, ভূপিন্দর হুডা, রাজীব শুক্লা প্রমুখ সিমলা পৌঁছচ্ছেন। দলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে আজই বৈঠক করতে পারেন নেতারা। কারণ, হিমাচলে জয় নিশ্চিত হলেও এখনও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঠিক করতে পারেনি, তাই সেই ফাঁক দিয়েই ছুরি চালাতে কসুর করবে না বিজেপি। ফলে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে কংগ্রেস এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে পার্বত্য রাজ্যে। তার সবিশেষ কারণ হচ্ছে, কংগ্রেসের যে তিনজনকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে ভাবা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কাকে বাছাই করা হবে, তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে তারা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের পরিবারতন্ত্র, নাকি নতুন কেউ! প্রতিভা সিংকে বাদ দিলে বাকি থাকছেন ২ জন। তাঁদের একজন অগ্নিহোত্র এবং সুক্কু হলেন কাংরা এলাকার প্রতিনিধি। এছাড়াও রয়েছে জাতপাতের হিসাব। অগ্নিহোত্র হলেন ব্রাহ্মণ, অন্যদিকে প্রতিভা এবং সুক্কু হলেন ঠাকুর সম্প্রদায়ের। সর্বোপরি, দলনেতা নির্বাচনে গুরুত্ব দেওয়া হবে ১০ জনপথের প্রতি কার আনুগত্য কতটা।
গুজরাতে সরকারপন্থী ভোট পড়লেও হিমাচলে সরকার-বিরোধী ভোটের কারণ কী? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গত ২ বছর ধরে শান্তশিষ্ট এই পাহাড়ি রাজ্যে বিজেপি গুজরাতের মতো কোনও পরিবর্তন করেনি। সরকার বিরোধী হাওয়া টের পেলেও মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরকে বদল করেনি গেরুয়া শিবির। ঠাকুর নিজেও অতি শান্ত এক ব্যক্তি। তাঁর মধ্যে কোনও আগ্রাসী মনোভাব নেই। তাঁর প্রতি কারও কোনও অভিযোগ নেই। উল্টোদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হিমাচলের ভূমিপুত্র জে পি নাড্ডা রাজ্য নেতৃত্বের উপর ছড়ি ঘোরানোয় দলের অন্দরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। রাজ্য নেতাদের অভাব-অভিযোগে তিনি কোনওদিন কর্ণপাত করেননি। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে বলেছিলেন, আমাকে ভোট দিন। তাতেও স্থানীয় নেতাদের মনে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছিল।