কলকাতা:কলকাতা: বাগুইআটির দুই কিশোরকে অপহরণ করে খুন। ছাত্রের ১৪ দিন নিখোঁজ থাকার পর ছেলের মৃতদেহ মর্গে শনাক্ত করল বাবা। মৃত দুই কিশোরের নাম অভিষেক নস্কর ও তার মামাতো ভাই অতনু দে। পরিবারের অভিযোগ, গত ২২ অগাস্ট বিকেলে বেড়াতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় তারা। তারপর থেকে আর কোনও হদিশ মেলেনি। অপহরণের পর ১ কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজও করে অপহরণকারীরা। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, এলাকারই এক যুবক সত্যেন্দ্র চৌধুরী পরিকল্পনা করে তাঁদের ডেকে বাইক কেনার নাম করে খুন করেছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র এখনও অধরা। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কোনও রকম সাহায্য করেনি। সোমবার রাতে পুলিশের তরফে জানানো হয় দুই ছাত্রের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশের দাবি, সত্যেন্দ্র নামে এলাকার এক ব্যক্তিকে বাইক কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল অতনু। কিন্তু বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও বাইক পায়নি সে। এই নিয়ে দুজনের মধ্যে বচসাও হয়। এরপরই দুজনকে খুন করার পরিকল্পনা করে সত্যেন্দ্র। গত ২২ অগাস্ট সত্যেন্দ্র অভিষেক ও অতনুকে বাইক কেনার নাম করে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। সেখানেই রাজহাটের এক বাইকের শোরুমেও যায় তারা। কিন্তু এরপর তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর ২৪ অগাস্ট বাগুইআটি থানায় অপহরণের অভিযোগ করেন অতনুর বাবা বিশ্বনাথ দে। এমনকী তাঁর ফোনে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজ আসতে থাকে।
সোমবার অভিজিৎ বসু নামে একজনকে আটক করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীর নাম। অভিজিৎ বস, শামিম আলি, সাহিল মোল্লা ও দিব্যেন্দু দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের আরও দাবি, খুন করার উদ্দেশ্য নিয়ে আগে থেকেই একটি গাড়ি ভাড়া করেছিল এই পাঁচজন। এমনকী দড়িও রাখা হয়েছিল গাড়িতে। এরপর বসিরহাটের আলাদা আলাদা জায়গায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করে ফেলে দেয় ওই দুই ছাত্রের দেহ।
পরদিন ২৪ অগাস্ট ন্যাজাট থানার বাসন্তী হাইওয়ে রাজবাড়ী মিনাখাঁর মেছো ঘেরিতে একটি মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সেই মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ন্যাজাট থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাটে জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। কিন্তু সেই মৃতদেহ শনাক্ত করতে কেউ পারছিল না। বিভিন্ন থানায় ওই দুই যুবকের ছবি পোস্ট করে তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছিল পুলিশ। মঙ্গলবার অভিষেকের বাবা অর্জুন নস্কর বসিরহাট জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে এসে ছেলের মৃতদেহ শনাক্ত করেন। কী কারণে এই যুবককে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হল। পাশাপাশি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে নাকি পুরনো শত্রুতার জেরেই এই খুন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।