নয়াদিল্লি: ‘আনন্দ নগরী’ বিষাদ নগরীতে দোমিনিক লাপিয়ের (Dominique Lapierre)। ৯১ বছরে প্রয়াত ‘সিটি অফ জয়’ (City of Joy), ‘ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট’ (Freedom at Midnight), ‘বিয়ন্ড লাভ’, ‘ফাইভ পাস্ট মিডনাইট ইন ভোপাল’, ‘ইজ প্যারিস বার্নিং’, ‘ইজ নিউ ইয়র্ক বার্নিং’, ‘আ রেনবো ইন দি নাইট’ নামের মর্মস্পর্শী সব গ্রন্থের লেখক লাপিয়ের। ভারত বিশেষত কলকাতা শহরের ‘দত্তকপুত্র’ দোমিনিক।
কখনও কল্লোলিনী তিলোত্তমার প্রাণস্পন্দন, এই শহরের ইতিকথা, জীবন সংগ্রাম ধরা পড়েছে তাঁর উপন্যাসে। কখনও ভারতের স্বাধীনতা অর্জন, গান্ধীজি উঠে এসেছেন তাঁর ঐতিহাসিক গ্রন্থে। সাবলীল ঝরনাধারার মতো ভাষা, সহজবোধ্য শব্দচয়ন ও সর্বোপরি সময় ও ইতিহাসের এক-একটি দলিল তাঁর রচনা। এইডস রোগ থেকে নেলসন ম্যান্ডেলার জীবন কিছুই বাদ রাখেননি সমাজের দর্পণ হিসেবে তুলে ধরতে সাহিত্যিক শব্দবন্ধে। সে কারণেই ভারতবন্ধু ফরাসি সাহিত্যিক দোমিনিক লাপিয়েরকে ২০০৮ সালে পদ্মভূষণ (Padma Bhushan) সম্মানে ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন: Prasenjit Chatterjee Negetive Role: প্রথমবার নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা জানালেন প্রসেনজিৎ
১৯৩১ সালের ৩০ জুলাই জন্ম লাপিয়েরের। তাঁর স্ত্রী দোমিনিক সোঁচোঁ লাপিয়ের সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, বয়সজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। খুব বেশি ভোগেননি তিনি। ভারতকে নিজের আত্মার মতোই ভালোবাসতেন, বিশেষত কলকাতাকে। এই শহরেরর মধ্যে তিনি এক প্রাণ খুঁজে পেয়েছিলেন। যাকে কেন্দ্র করে তাঁর কলম থেকে বেরিয়ে আসে সিটি অফ জয় নামের উপন্যাস। যে উপন্যাসকে নিয়ে ১৯৯২ সালে রোলাঁ জোফে প্যাট্রিক সোয়াজে ও ওম পুরীকে নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেন।
হাওড়ার পিলখানা এলাকার বস্তি আনন্দ নগরের জীবনযাত্রা নিয়ে উপন্যাসের সূচনা। এই গ্রন্থের স্বত্বের অর্ধেক অর্থ তিনি শহরের বেশ কয়েকটি সামাজিক উন্নয়ন খাতে দিয়েছিলেন। এছাড়া কলকাতা ও শহরতলিতে কুষ্ঠ, পোলিও রোগাক্রান্ত শিশুদের প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অর্থ সাহায্য পাঠাতেন। নিজেও বহুবার এসেছেন। শিক্ষা, পুনর্বাসন ও নিকাশি কাজেও বহু অর্থ দান করেছেন লাপিয়ের।
ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইটে তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন থেকে মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু ও অন্ত্যেষ্টি পর্যন্ত সময়কালকে তুলে ধরেছেন ছবির মতো। ১৯৮৪ সালে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনাকে অবলম্বন করে তিনি লেখেন ফাইভ পাস্ট মিডনাইট ইন ভোপাল। এই গ্রন্থেরও স্বত্বের একাংশ ভোপালে একটি চিকিৎসা কেন্দ্র চালাতে দান করেন লেখক।