শিলং: মেঘালয়ে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে শাসক জোটের শরিক দল বিজেপির ২ জন মহিলা পদাধিকারী রয়েছেন। সোমবার তুরা শহরে অবস্থিত মিনি সচিবালয়ে চলা এক বৈঠকের শেষে হামলা চালানোর ঘটনায় দুজন তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকেও পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে। জনতাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
মণিপুর যখন জ্বলছে, তখন প্রতিবেশী মেঘালয়েও তার খানিক আঁচ পড়ল। তুরাকে শীতকালীন রাজধানী করার দাবিতে দীর্ঘকাল ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছে আচিকদের (আদিবাসীদের) একটি সংগঠন এবং গারো পার্বত্য রাজ্য আন্দোলন কমিটি। এই দুই সংগঠনকে নিয়ে বিজেপি সমর্থিত মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বৈঠকের মধ্যেই সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন লক্ষ্য করে ঢিল-পাথর ছোড়ে একদল জনতা। সেই ঘটনায় জনা সাতেক পুলিশ কর্মী জখম হন। গারো পাহাড়বাসীর ‘জন্মসূত্র অধিকার’ নিয়ে আলোচনার শেষ নাগাদ ওই ঘটনায় প্রায় হাজারখানেক জনতা ঢিল-পাটকেল ছোড়ে। পুলিশ ওই ঘটনায় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠি চালায়, তারপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। উত্তেজনা থাকায় মুখ্যমন্ত্রী সারারাত সেখান থেকে বেরতেই পারেননি। মঙ্গলবার সকালে শিলংয়ের বাড়িতে ফেরেন সাংমা।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ২ মহিলাসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্তত ২১টি গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ থাকায় এদিন তুরা পুরসভা এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। মূল সমস্যা হল গারো পার্বত্য এলাকার নাগরিক সমাজ তুরাকে রাজ্যের শীতকালীন রাজধানী করার দাবিতে অনশন করছে। দুটি প্রতিবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে বসেছিলেন সাংমা।
আলোচনা যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখন গোড়ার দিকে শখানেক জনতা সেখানে জড়ো হয়। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যাটি বাড়তে থাকে। তারপর আচমকা পাথর ছুড়তে শুরু করে জনতা। একটি ভিডিও বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আলোচনা চলছিল। শিলংয়ে ফের আলোচনায় বসার জন্য কথাবার্তা চলছিল। সংগঠনগুলিও কমবেশি সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে এসেছিল। আলোচনা প্রায় শেষলগ্নে তখন বাইরে হঠাৎ করেই চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যায়। আমি গিয়ে ওদের বিক্ষোভ দেখাতে বারণ করি। সংগঠনের নেতারাও বাইরে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। তাঁরা ভিতরে এসে বলেন, ওরা কারা তা তাঁরা জানেন না। অনশন বিক্ষোভেও এদের কেউ ছিল না। সম্পূর্ণ অজ্ঞাতপরিচয় ওই লোকগুলো।