কলকাতা: টিকা-কাণ্ডে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে কেউটে৷ কোভিড অতিমারীকে হাতিয়ার করে এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব৷ আইএএস অফিসার সেজে নীল বাতি গাড়িতে ঘুরে বেড়াতেন। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে ‘প্রভাবশালীদের’ সঙ্গে মেলামেশা করতেন৷ তার পর বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতেন দেবাঞ্জন৷ তদন্তকারীদের অনুমান, আইএএস অফিসার পরিচয় দিয়ে টাকা আদায় করাই ছিল দেবাঞ্জনের মতলব৷ সেই প্রতারণার ফাঁদে আর কাকে কাকে ফেলার ছক কষেছিলেন তিনি, সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ৷
আরও পড়ুন: বারবার বয়ান বদল, পুলিশকে বিভ্রান্ত করছেন দেবাঞ্জন
কলকাতা লাগোয়া আনন্দপুরের বাসিন্দা ২৮ বছরের দেবাঞ্জন দেব৷ শিয়ালদহের টাকি স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় পাশ করার পর চারুচন্দ্র কলেজে প্রাণিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখানকার পাট চুকিয়ে ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিষয় ছিল জেনেটিক্স। কিন্তু কোর্স সম্পূর্ণ করার আগেই মাঝপথে পড়া ছেড়ে দেন দেবাঞ্জন৷ এর পর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরবিদ্যার একটি কোর্সে ভর্তি হন৷ সেটিও মাঝপথে ছেড়ে দেন৷
আরও পড়ুন: দেবাঞ্জনের ফ্রিজারে অ্যামিকাসিনের ভয়েল
তদন্তকারীদের কাছে দেবাঞ্জনের দাবি, তিনি গানের অ্যালবাম এবং ডকুমেন্টারি বানাতেন৷ অতিমারীর সময় মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই কিটের ব্যবসা শুরু করার ফন্দি মাথায় আসে তাঁর৷ অধিকাংশ সামগ্রী কলকাতার মেহতা বিল্ডিং এবং বাগরি মার্কেট থেকে কিনতেন দেবাঞ্জন৷ এর পর সেগুলি চড়া দামে অন্য সংস্থাকে বিক্রি করতেন৷ কসবার ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রে যে ভুয়ো ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল, সেগুলিও বাগরি মার্কেট থেকে কেনা বলে জেরায় বলেছেন দেবাঞ্জন৷ বাবা মনোরঞ্জন দেব আবগারি দফতরের অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন৷ ছেলের প্রতারণা চক্রে তিনিও জড়িত কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ৷ আপাতত কলকাতা পুলিশের হেফাজতে দেবাঞ্জন৷ তাকে ২৯ জুন পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক৷