কলকাতা : ১৩ বছর ধরে বিচারের আশায় এজলাসে এজলাসে ঘুরছেন। কোথাও বিচার পাচ্ছেন না। অবশেষে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ। আইনজীবীর কাতর আবেদন, ‘আপনি একটা সুরাহা করুন। কোথাও বিচার পাচ্ছি না।’ প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘নির্দিষ্ট এজলাসে আবেদন জানান।’ আবেদনকারী আইনজীবীর উত্তর, ‘আবেদন করলেও একক বেঞ্চে কোনও সুরাহা হচ্ছে না।’
আদালত সূত্রে খবর, ২০০৯ সালে নিউ আলিপুরের (New Alipur) একটি বাড়ির মালিক বিনোদ কুমার সিং তাঁর ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন। নিম্ন আদালতে প্রথমে বকেয়া ভাড়ার মামলায় জেতেন বাড়ির মালিক। সেই সুবাদে ভাড়াটিয়ার উচ্ছেদ চেয়ে নিম্ন আদালতে আবেদন জানান বিনোদ। এই সময় ভাড়াটিয়া আদালতে বকেয়া ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান। সেই আবেদনে সাড়া দেয় নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিনোদ। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায়ের ওপরে স্থগিতাদেশ দেন। পাশাপাশি মামলাটি পাঠিয়ে দেন স্পেশাল বেঞ্চে। গত ৪ অক্টোবর বিচারপতি অরিন্দম সিনহা ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের স্পেশাল ডিভিশন বেঞ্চ বাড়ির মালিকের পক্ষে রায় দেয়। ওই বেঞ্চ ফের মামলাটি একক বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন : পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
আবেদনকারীর আইনজীবীর অভিযোগ, বিভিন্ন একক বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও কোনও বিচারপতি এই মামলার শুনানি গ্রহণে তৎপরতা দেখাচ্ছেন না। সোমবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আবেদনকারীর আইনজীবী। নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের বিষয় সংক্রান্ত এক্তিয়ার নির্ধারিত করেন প্রধান বিচারপতি। তাই আইনজীবীর আবেদন, অবিলম্বে প্রধান বিচারপতিই ঠিক করে দিন, এই মামলার শুনানি গ্রহণ করবেন কোন বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
কলকাতা হাইকোর্টের হাজার হাজার মামলা বহু বছর ধরে বকেয়া রয়ে গেছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিরা এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবও শপথ গ্রহণের দিন বকেয়া মামলা নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন।