কলকাতা: তদন্তে গাফিলতি নিয়ে এবার সিবিআইকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্তে গাফিলতি হলে রাজ্যের মানুষ কার উপরে ভরসা করবে, মন্তব্য হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। ২০১২ সালে পুলিস হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল হুগলির ধনেখালির বাসিন্দা নাসিরউদ্দিনের। আদালতের নির্দেশে রাজ্য পুলিসের থেকে সেই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। ওই মামলারই শুনানি ছিল সোমবার। সিবিআইয়ের তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে এদিন অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশ, সিবিআইয়ের দিল্লি অফিসের ডিআইজি এই ঘটনার অনুসন্ধান করবেন। সেই রিপোর্ট আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিতে হবে।
২০১২ সালে ধনেখালি থানায় পুলিস হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে শেখ নাসিরউদ্দিনের। ওই ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য। আইনজীবী প্রতিম সিংহ রায় কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রাজ্য পুলিশ নয়, এই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই।
শুরু হয় সিবিআই তদন্ত। ৩০৪(এ) ধারায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। চার্জশিটে বলা হয়, পুলিশের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে নাসিরুদ্দিনের।
আরও পড়ুন: School Service Commission: আদালতে দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যানের বয়ান, বিপাকে স্কুল সার্ভিস কমিশন
সিবিআই তদন্তে খুশি না হয়ে নাসিরউদ্দিনের স্ত্রী মানুজা বিবি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সোমবার আদালতে জানান, সিসিটিভি ফুটেজে শেখ নাসিরউদ্দিনের গায়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছে। তা সত্ত্বেও সিবিআই শুধুমাত্র গাফিলতির অভিযোগ এনে তদন্তের কাজ শেষ করেছে।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মন্তব্য করেন, রাজ্যের মানুষ পুলিসি তদন্তে খুশি হতে না পেরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর ভরসা রাখতে চাইছে। অথচ সিবিআইয়ের এই ধরনের তদন্ত আদালতকে আশ্চর্য করেছে। সিবিআইয়ের তদন্তের হাল যদি এরকম হয়, তাহলে রাজ্যের সাধারণ মানুষ কার ওপরে ভরসা করবে?