কলকাতা: রাজ্য নির্বাচন কমিশনার (State Election Commissioner) সৌরভ দাসকে (Sourav Das) ফের রাজভবনে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Governor Jagdeep Dhankhar)। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সৌরভ দাসকে রাজভবনে তলব করেছেন তিনি। বুধবার টুইট করে এই তলব করার কথা জানিয়েছেন ধনখড়। রাজ্যপালের টুইটে সংবিধানের (Constitution Of India) অনুচ্ছেদ ২৪৩ (কে)-র উল্লেখ তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সংবিধানের ওই অংশে বলা হয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যদি লোক-লস্করের প্রয়োজন থাকে, তা হলে তারা রাজ্যপালকে জানাতে পারে। রাজ্যপাল সেইমতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।
জগদীপ ধনখড়ের এই টুইট ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। তা হলে কী ইঙ্গিত করতে চাইছেন রাজ্যপাল? বিজেপি আগেই পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি তুলেছে। মঙ্গলবার বিজেপি-র একটি প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়েও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের নালিশ করে এসেছে। ঘটনাচক্রে তার পরেই সৌরভ দাসের তলব এসেছে রাজভবন থেকে।
কলকাতা হাইকোর্টে ইতিমধ্যে হলফনামা দিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, একসঙ্গে ১১৪টি পুরসভায় ভোট করানোর মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাদের হাতে নেই। ইভিএমের অপ্রতুলতার কথাও বলেছিল কমিশন। তাই প্রথমে কলকাতা ও হাওড়ার ভোট ঘোষণা করেছিল কমিশন। ধাপে ধাপে বাকি পুরসভায় ভোট করানোর কথা বলা হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন পুরভোটের নিরাপত্তা নিয়ে খোঁজখবর নিয়ে, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর প্রস্তাব দিতে পারেন রাজ্যপাল।
কলকাতা ও হাওড়ার পুরভোটের দিন ঠিক হওয়ার পরেও সৌরভ দাসকে ডেকে পাঠিয়ে সংবিধানের পাঠ শিখিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যপাল কমিশনের কড়া সমালোচনা করে বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মতোই রাজ্য নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা, রাজ্যের অংশ নয়। এ-ও বলেছিলেন, তিনি চান, একসঙ্গে সবক’টি পুরসভায় ভোট হোক। সেসময় রাজনৈতিক মহলের একাংশ ধরে নিয়েছিল, হাওড়া পুরসভা থেকে বালিকে পৃথক করা সংক্রান্ত সংশোধনী বিলের কোনও ত্রুটি নিয়ে কথা বলতেই হয়তো রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছেন ধনখড়। কিন্তু তিনি ওই বিল নিয়ে বিন্দুমাত্র আলোচনাই করেননি। সংশোধনীতে সইও করেননি। যে কারণে হাওড়া পুরসভাকে বাদ দিয়েই কলকাতা পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয় নির্বাচন কমিশনকে।
আরও পড়ুন: তৃণমূল নাম মোছায় প্রয়াত সুব্রতর বোন তনিমা আজ নির্দল
এদিকে, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টেও বিজেপির দায়ের করা মামলার শুনানি ছিল। সেখানেও হাইকোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। বাকি পুরসভাগুলোয় কবে ভোট কারানো হবে, কমিশনের কাছে তা হলফনামা আকারে জানতে চাওয়া হয়। কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। যদিও কলকাতার পুরভোট স্থগিত সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ হাইকোর্ট দেয়নি। আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।