জুয়ার ঠেক তোলার প্রতিবাদে খুন হন সবং এর কার্তিক মণ্ডল।২০১৭ সালের এই ঘটনায় পুলিশ এখনও আসল অপরাধীদের গ্রেফতার করেনি। অবিলম্বে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মৃৃত কার্তিক মণ্ডলের স্ত্রীর জবানবন্দির নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন হিমাচলের ভূমিধসে আটকে নদীর গতিপথ, বন্যার আশঙ্কা আশপাশের গ্রামে
পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার অন্তর্গত খাউখন্ড গ্রামে ক্রমশ বেড়ে উঠছিল দুষ্কৃতীদের উৎপাত। জুয়ার ঠেক থেকে শুরু করে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক।তারই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন খাউখন্ড গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক মণ্ডল। কয়েকজন গ্রামবাসীকে নিয়ে তিনি সেই জুয়ার ঠেকও ভেঙে দিয়েছিলেন।ঘটনার জেরেই ওই দুষ্কৃতীরা ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর সকাল ৬ টার সময় তাঁর বাড়ির সামনে কার্তিককে খুন করে। ঘটনায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের না করলেও, হরে কৃষ্ণ মন্ডল নামে গ্রামবাসী সবং থানায় এফআইআর দায়ের করেন। কার্তিকের পরিবারের আইনজীবী মলয় ভট্টাচার্য ও আইনজীবী গৌরব ঘোষের অভিযোগ ওই এফআইআর-এ ভিত্তিতে আসল অভিযুক্তদের আজও গ্রেফতার করা হয়নি।
আরও পড়ুন ‘জবাব চাই, জবাব দিন’ টুইট ভিডিওয় প্রধানমন্ত্রীকে তোপ তৃণমূলের
ঘটনায় মৃতের পরিবারের অভিযোগ, কার্তিকের স্ত্রী বুলটি মন্ডল পুলিশের সামনে ১৬১ স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। সেই স্টেটমেন্টে উল্লেখ করেছেন ১৪ জন অভিযুক্তের নাম। কিন্তু সবং থানার পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি। পরে আসল অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে কার্তিক মন্ডল এর বাবা শংকর মন্ডল বিভিন্ন দপ্তরে এমনকি মানবাধিকার কমিশনের আবেদন জানিয়ে অভিযোগ করেন। তা সত্ত্বেও জেলা পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।অভিযোগটি পুলিশ এফআইআর হিসাবে রূপান্তর করেনি ফলে অভিযুক্তরা অধরাই থেকে যায়।
আরও পড়ুন মঙ্গলকোটে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করল সিআইডি
আইনজীবী মলয় ভট্টাচার্য ও গৌরব ঘোষ আদালতে জানান , ২০১৭ সালে ওই পরিবার আসল অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু তাতেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে কার্তিকের পরিবার।বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে মামলার শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবী আদালতকে জানান, এই খুনের অবিলম্বে চার্জশিট পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন মেধাবী রুমানাকে ‘মুসলিম’ বলায় বিতর্ক, সংসদের সভাপতি পদ থেকে অপসারিত মহুয়া
এই বিষয়ে বিচারপতি দেবাংশু বসাক মন্তব্য করেন, প্রত্যেক মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু কার্তিক মন্ডলের স্ত্রীর করা অভিযোগকে কেন এফআইআর-এ পরিবর্তন করা হল না এই বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন।আইনের নিয়ম অনুযায়ী কোন ঘটনা ঘটলে সেই ঘটনা সম্পর্কে ১৬১ স্টেটমেন্ট নেওয়া হয় তদন্তকারী অফিসার এর সামনে। কিন্তু ১৬৪ স্টেটমেন্ট দেওয়া হয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে।যেহেতু পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী এফআইআর-এ অভিযুক্তদের প্রকৃত নাম উল্লেখ করা হয়নি। তাই বিচারপতি দেবাংশু বসাক নির্দেশ দেন অবিলম্বে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কার্তিক মন্ডল এর স্ত্রীর ১৬৪ স্টেটমেন্ট লিপিবদ্ধ করতে হবে। সেই স্টেটমেন্টই আগামী সপ্তাহেই আইনজীবীকে কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিতে হবে।