কলকাতা: গত ১১ বছর ধরে একের পর এক নির্বাচনে ভোট কমতে কমতে একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে সিপিএমের। সদ সমাপ্ত পুর নির্বাচনে তাদের ভোট শতাংশ কিছুটা বাড়লেও সিপিএম একটি পুরসভাও দখল করতে পারেনি। এই আবহে মঙ্গলবার থেকে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুরু হল সিপিএমের ২৬তম রাজ্য সম্মেলন। সম্মেলনে উপস্থিত আছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিট ব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু, তপন সেন, বিমান বসু, রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সহ একঝাঁক নেতা। রাজ্য সম্মেলন চলবে ১৭ মার্চ পর্যন্ত।
দলীয় সূত্রে খবর, এবারের রাজ্য সম্মেলনে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে আত্মসমীক্ষা এবং আত্মবিশ্লেষণের উপর। ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের পর সিপিএম বা বামেদের মিছিল-মিটিং-জমায়েতে ভিড় হলেও ভোট মেশিনে তার কোনও প্রভাব পড়ছে না। ১১ বছর ধরে তা নিয়ে সিপিএমের অন্দরে কাটাছেঁড়া হয়েই চলেছে। মঙ্গলবার রাজ্য সম্মেলনে যে ১০৯ পাতার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, সেখানেও এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ওই খসড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, তৃণমূল সরকারের স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপোশ্রীর মতো প্রকল্পগুলিতে মানুষ বিপুল ভাবে আস্থা রাখছে। এগুলি দিয়ে যে ভবিষ্যৎ চলবে না, মানুষকে সে কথা বোঝানো যাচ্ছে না। বামপন্থীদের রাজনৈতিক বোধ কোনও কাজে লাগছে না। বাধ্য হয়ে দলের নিচুতলার কর্মীদের এই সব সরকারি প্রকল্পের জন্য সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে বলা হচ্ছে। খসড়া রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই সব প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষ যে উপকৃত হচ্ছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই পরিস্থিতিতে বামপন্থী চিন্তাধারার মাধ্যমে মানুষকে এখন আর প্রভাবিত করা যাচ্ছে না।
একই সঙ্গে দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনে সদস্য সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক খসড়া রিপোর্টে। সরকারি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকে বিগত বছরগুলিতে নিষ্ক্রিয় সদস্যদের কোনও ভাবেই দলের কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দলীয় সূত্রের খবর, এ সব নিয়ে রাজ্য সম্মেলনে বিস্তারিত আলোচনা হবে। দলীয় নেতৃত্ব গ্রামগঞ্জ থেকে আসা প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে তাঁদের অভিজ্ঞতা শুনতে চান।
সিপিএমের পরবর্তী রাজ্য সম্পাদক কে হবেন, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বয়সসীমা বেঁধে দেওয়ায় এবার দলের বিভিন্ন স্তরের কমিটি থেকে অনেককেই সরে যেতে হচ্ছে। সেই মতো সূর্যকান্ত মিশ্রের জায়গায় নতুন রাজ্য সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। দৌড়ে রয়েছে পলিট ব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমও। যদিও শ্রীদীপের তুলনায় মহম্মদ সেলিমের পরিচিতি অনেক বেশি। হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি, উর্দু সব ভাষাতেই তিনি সমান স্বচ্ছন্দ।
আরও পড়ুন: Hijab Row Karnataka HC: হিজাব ইসলাম ধর্মের আবশ্যিক অঙ্গ নয়, হিজাব বিতর্কে রায় কর্নাটক হাইকোর্টের