কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: পড়াশোনার জন্য সুদূর আফগানিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন মোহাম্মদ তাহের। ইচ্ছা রয়েছে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করার।
আফগানিস্তানের ছোট্ট একটি গ্রাম পাকতিকা। চারিদিকের পাহাড় এই গ্রাম। এই গ্রামে ছোট থেকে বড় হওয়া মোহাম্মদ তাহের রহমাতির। ছোট থেকেই অশান্ত পরিবেশ ছিল আফগানিস্থানে। লড়াই, যুদ্ধ, গুলিগোলা এসবের মধ্যে থেকেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। তাহের দেখেছে আফগানিস্থানে পড়াশোনার পরিবেশ নেই। গ্রামের ছেলেরা পড়ার সুযোগ পেলেও মেয়েরা একদমই সুযোগ পায় না। তখন থেকেই তাহের চেয়েছিলেন আফগানিস্থানে মানুষগুলোকে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে। আফগানের WB বাবা স্কুল থেকে ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন- আফগানদের পাশে ভারত, সমস্ত রকম সাহায্যের নির্দেশ মোদির
এরপর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে ২০২০ সালে ভারতে আসেন তাহের। পৌঁছন কলকাতায়। অচেনা দেশ, অজানা শহর। দু’চোখে স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনার জন্য তিনি পৌঁছন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু ইউনাইটেড নেশানশ হাই কমিশন (UNHCR) -এর অনুমতি ছাড়া বিদেশি ছাত্র তাহেরকে ভর্তি নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। বছর ঘুরে যায়। তবুও মেলেনি অ্যাডমিশন। অধরাই থেকে যায় স্বপ্ন।
রিফিউজি হয়ে কলকাতার রাস্তায় ঘুরছিলেন তাহের। এক খান বাবা তাহেরের কথা জানতে পারেন। তারপর থেকেই তাহেরকে নিজেদের সঙ্গেই রাখেন তাঁরা। অ্যাডমিশন না পেয়ে দেশে ফিরে যেতে মনস্থির করেছিলেন তাহের। তবে, চাইলেও ফিরতে পারছেন না দেশে। কারণ গত ১৫ অগস্ট রবিবার আফগানিস্তান দখল করেছে তালিবানরা। তার পর থেকেই তালিবানিদের বন্দুক আফগানিদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়ছেন সকলে। কাতারে কাতারে মানুষ বিমানবন্দরে ভিড় করেছেন।
আরও পড়ুন- তালিবানদের হটাতে আফগানিস্তানে সেনা নামানোর ইঙ্গিত বাইডেনের
আফগানিস্তানে ঘটে যাওয়া এই সমস্ত ঘটনা টিভি, মোবাইল, ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখছে তাহের। তাতেই শিউরে উঠছে সে। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানেই রয়েছে তাহেরের পরিবার। বাড়িতে রয়েছে তার বাবা-মা তিন ভাই ও এক বোন। বাড়ির সঙ্গে বিগত দুই মাস ধরে কোনরকম যোগাযোগ করতে পারছেন না তাহের। কিন্তু কেমন আছেন তারা? সেই চিন্তায় দিন কাটছে তাঁরা। চাইলেও দেশে ফিরতে পারছেন না। আর সামান্য টাকা বেঁচে রয়েছে তাঁর কাছে যা দিয়ে খুব বেশিদিন কলকাতায় থাকাও সম্ভব নয়। এখনও পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চান আফগানি তাহের। সাহায্যও প্রার্থনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।