কলকাতা: আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। চারিদিকে শরতের পরিবেশ এবং কিছু দিন পর থেকেই দেখা যাবে কাশফুল। শিউলি ফুলের গন্ধে ভরে উঠবে চারদিক। এবারের দুর্ধর্ষ গরম কমে গিয়ে বাতাসে হিমের ছোঁয়া মিলতে শুরু করবে। সেজে উঠবে কলকাতা।
এদিকে লন্ডন হয়ে উঠবে মিনি তিলোত্তমা। বিলেতে এই সময় আকাশ মোটর ওপর ঝকঝকে, কিন্তু ভরসা নেই। একটু যেন উত্তুরে হাওয়ার দাপট বেশী, বৃষ্টি হলেও হওয়ার চান্স থাকে। বিশ্বের দুই প্রান্তের দুই মহানগরকে মিলিয়ে দেয় বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। ঢাকের বাদ্যি থেকে শুরু করে শাঁখের আওয়াজ, উলু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টেমস। সুসজ্জিত বোটে চড়ে মা দুর্গা ঘোরেন টেমস নদী।
আরও পড়ুন: চার বছর পর নিজের রূপ পরিবর্তন করল গুগল!
লন্ডনের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা ৬৫টি পরিবারের সম্মিলিত আয়োজনে পুজো হয়। এ যেন বিলেতের বুকে কলকাতার বারোয়ারী পুজোর স্বার্থক প্রতিফলন। শুধু মাত্র এই পরিবারগুলিই নয়, চার দিন ধরে এই উৎসবে দূরদূরান্ত থেকে বহুমানুষ এসে জমায়েত হন।
বাংলার মতো কিন্তু এবার থিমের ছোঁয়া লেগেছে বিদেশেও। বোধন থেকে শুরু করে বরণ এবং বিসর্জন সব কিছুই হয় অত্যন্ত ভালভাবে। অনেকেই জানেন, অষ্টমীতে লন্ডন শারদ উৎসবে কুমারী পুজো বিশেষ উল্লেখযোগ্য। অঞ্জলী, আরতি, সন্ধি পুজো, চন্ডী পাঠ সবইকিন্তু হয় এখানে। বহু মানুষ এই উৎসবে আসেন মা দুর্গাকে বরণ করতে। তারপর বেশ চর্চিত সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। জানেন? পুরুষেরাও সমান আগ্রহে অংশগ্রহণ করে থাকেন এই খেলাতে।তারপর বিসর্জনের সময় মঙ্গল ঘট বিসর্জিত হয় কৃত্রিম একটি জলাশয়ে। দুর্গা বিসর্জনের কার্নিভ্যালে হাজির হন হাজার হাজার প্রবাসী বাঙালিরা। এর পাশাপাশি বিদেশিরাও মুগ্ধ হয়ে বাংলার সংস্কৃতির স্বাদ উপভোগ করবেন।
আচ্ছা! আড্ডা কি কখনও খাওয়া-দাওয়া ছাড়া হয়? তাই প্রচুর স্থানীয় মানুষ স্টল দেবেন টেমসের ধার বেয়ে। কলকাতার বিখ্যাত বিখ্যাত স্ট্রিট-ফুডের গন্ধে ম ম করবে লন্ডনের সব পুজো প্যান্ডেল। মনে হবে যেন আস্ত কলকাতাটা স্যুটকেসে ভরে যেন কেউ টেমসনগরীতে নিয়ে এসেছে। পুজোর প্রতিটা দিন লন্ডনে চলে বেশ জমজমাট আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া। এছাড়াও বাঙালি পোশাকে এখানে পুজোর দিনগুলো আনন্দে কাটান প্রবাসী ভারতীয়রা। লন্ডনের আদি বাসিন্দারাও পুজো দেখতে আসেন। তবে এবার বাংলায় না এসেও কিন্তু বাংলার ঐতিহ্যকে কাছ থেকে দেখেন।