কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হল বাংলাদেশের ছবি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। বুধবার দুপুরে ছবিটি প্রদর্শিত হবার পর এতটাই ভূয়শী প্রশংসা কুড়িয়েছে যে ছবিটির প্রধান চরিত্রের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন আপ্লুত হয়ে কান্না সামলাতে পারেননি। হলের এর মধ্যেই তিনি কেঁদে ফেলেন। ছবিটি পরিচালনা করেছেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চ থেকে অভিনেত্রী বাঁধন জানিয়েছেন, ‘ছবিটি দেখার পর দর্শকদের যে প্রতিক্রিয়া ছিল জানিনা তা কজন লক্ষ্য করেছিলেন! সকলে আমাকে যার সম্মান দিয়েছে জানিনা সেটা আমি পাবার যোগ্য কি না। এই সম্মান প্রাপ্তির সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আমার পরিচালক এবং পুরো দলের। কারণ এই কাজটা একার পক্ষে সম্ভব নয়, সবার কষ্টের ফল’। কেঁদে ফেলার পর বাধন অবশ্য প্রাণ খুলে হেসেছেন।ছবির শেষে দর্শকরা আজমেরী হক বাঁধনের কাছে এসে অভিনন্দন জানিয়ে গেছেন। অভিনেত্রী আরো বলেছেন,’বিগত দিনগুলোর প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম। কারন অনেক ভয় কাজ করছিল। আবার মনে মনে উচ্চসিত ছিলাম। তাছাড়া কোভিডের সমস্যা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত ছিলাম আমরা। গতকাল আমাদের ফেস্টিভ্যালে আসার আগে কোভিড পরীক্ষা করতে হয়েছিল। আমাদের টিমের কারোর যদি পজিটিভ আসতো জানিনা কি হতো! সব মিলিয়ে খুবই চাপের মধ্যে সময় কেটেছে’।
প্রসঙ্গত ১৯ বছর পর কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের ছবি প্রদর্শিত হলো। কানের অফিশিয়াল সিলেকশনের ‘অঁ সেত্রাঁ রিগা’ বিভাগে নির্বাচিত হয়েছিল ‘রেহানা মরিয়াম নূর’ ছবিটি। ছবির টিম লাল কার্পেট ফটোশুটে অংশ নিয়েছিলেন। এই বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় ছবির জন্য বিশ্বের তরুণ নির্মাতাদের জায়গা করে দেয় কান। সেই সঙ্গে থাকতে হবে ছবিতে কোন বিশেষত্ব। এটি ছিল পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ এর দ্বিতীয় ছবি। ২০১৬ সালে তিনি তৈরি করেছিলেন ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’।
প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রেহানা মারিয়া নূর কে কেন্দ্র করে এই ছবির গল্প। যেখানে রেহানা একজন মা-মেয়ে বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করেন। এরই মধ্যে এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বের হওয়ার সময় রেহানা একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হন। তা নিয়েই এ ছবির কাহিনী। রেহানা চরিত্রেই অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন।আজমেরী এর আগে বেশ কয়েকটি নাটক ও ধারাবাহিক এ কাজ করেছেন। এটি তার দ্বিতীয় বড় পর্দার ছবি।
আগামী ১৬ জুলাই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের এই ছবির কপালে কি আছে তা সেদিনই জানা যাবে। এ প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘অল্প পেতে পেতে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায় আমরা হয়তো সেই জায়গায় চলে এসেছি। আশা করছি আগামী ১৬ ই জুলাই আরো ভালো কিছু খবর নিয়ে দেশে ফিরতে পারব’।