কাবুল: তালিবান গ্রাসে জর্জরিত আফগানিস্তান। ক্রমেই ভেঙে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে দেখা দিয়েছে গভীর সংকট। সে সংকট এতটাই তীব্র যে, অনেকে কিডনি বেচে টাকা জোগাড় করছেন সংসার চালানোর জন্য। কেউ কেউ আবার কোলের শিশুসন্তানকেও বিক্রি করে দিচ্ছেন অভাবের তাড়নায়।
আফগানিস্তানে তালিবান হামলার সময় দেশ ছেড়েছে বহু মানুষ। কিন্তু যাঁরা দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি কিংবা দেশ ছাড়ার মতো অবস্থা নেই, তাঁরা পড়েছেন মহা সমস্যায়। কাবুল সহ দেশের বিভিন্ন শহরে রাস্তায় রাস্তায় আফগান নাগরিকদের দেখা যাচ্ছে আসবাবপত্র বিক্রি করে দিতে। বাড়ির চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ, টিভি, সোফা, আলমারির পসরা সাজিয়ে খোলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকছেন বহু নাগরিক। যে দর পাচ্ছেন, তাতেই তাঁরা সে সব আসবাবপত্র বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সম্প্রতি এক মহিলা জানান, অভাবের তাড়নায় তিনি নিজের একটি কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন আর আগের মতো শরীর চলে না। এবার কোলের ছেলেকেও বিক্রি করার কথা ভাবছেন ওই মহিলা।
আরও পড়ুন: পশ্চিম আফগানিস্তানে জোড়া ভূমিকম্প, মৃত ২২
ওই মহিলা একাই নন, হিরাট প্রদেশের বহু মানুষ খাবার জোগাড়ের জন্য নিজেদের কিডনি বিক্রি করে দিচ্ছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী শিবিরের বাইরে আফগান নাগরিকদের লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে টাকার জন্য। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক পদস্থ কর্তা জানান, আফগানিস্তানের প্রায় আড়াই কোটি মানুষ জানেই না, সকালের খাবার জুটলেও রাতের খাবার আদৌ জুটবে কি না। ইঞ্জিল জেলার বাসিন্দাদেরও একই অবস্থা। কিছু টাকার জন্য চোরাবাজারে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। যদিও আফগানিস্তানে দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয়। নাগরিকদের বক্তব্য, এ ছাড়া উপায় কী? বেঁচে থাকতে হলে তো টাকার দরকার।