প্রতি বছরের মত জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘে একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। দেশ বিদেশের প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছেন সেই সম্মেলনে। তখনও সম্মেলন শুরু হয়নি। হঠাৎ করেই দেখা গেল জাতিসংঘের অডিটোরিয়ামে একটি ডাইনোসর প্রবেশ করল। সিনেমা ছাড়া বাস্তবে এই ডাইনোসর দেখতে পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। তাহলে এই ডাইনোসর এল কোথা থেকে ? অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করেই চারপাশটা চোখ বুলিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে অডিটোরিয়ামের পোডিয়ামের দিকে এগোচ্ছে বহু কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া জীবটি। আশপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা পালতে না পারলেও নিজেদের প্রাণ হাতে করে যে যার আসনে বসে রয়েছে। ভয়ে অনেকের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
মুখে হালকা গর্জন করতে করতে পোডিয়ামের সামনে গিয়ে দাঁড়াল ডাইনোসরটি। তার সামনে দাঁড়িয়ে এক নিরাপত্তারক্ষী। ভয়ে তাঁরও হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে। কি করবেন বুঝতে পারছেন না। আর তখনও সম্পূর্ণ মানুষের গলায় ডাইনোসরটি বলল, “তুমি ঠিক আছো ?” এই কথা শুনে নিরাপত্তারক্ষী চুপ করে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলেন। তারপর পোডিয়ামের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় সেই ডাইনোসর। তারপর মাইক ঠিক করে ধরে সে তার বক্তব্য রাখে। ডাইনোসরের বক্তব্য জুড়ে ছিল বিলুপ্তির কথা।
আরও পড়ুন : লাদেনকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছে পাকিস্তান, রাষ্ট্রসংঘের অধিবেশনে স্পষ্ট জানাল ভারত
বুধবার জাতিসংঘের তরফে টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। আগামী ৩১ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। দেশ বিদেশের কূটনীতিবিদরা যোগ দেবেন এই সম্মেলনে। তার আগেই এই সৃজনশীল ভিডিও আনল জাতিসংঘ। দিনের পর দিন প্রাকৃতিক বিপর্যয়, পরিবেশ দূষণের ফলে প্রকৃতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটছে। অনেক জীব জন্তু বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই বিলুপ্তি রুখতে ডাইনোসরকে দিয়ে সচেতনতার বার্তা দিতে চেয়েছে জাতিসংঘ। ডাইনোসরটিকে বলতে শোনা যায়, তাদের বিলুপ্তির জন্য দায়ী ছিল পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়া এক গ্রহাণু। কিন্তু মানুষ আজ যা করছে, যার জন্য পৃথিবী থেকে অনেক জীব, বহু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, তার জন্য মানুষ কাকে দায়ী করবে ? ডাইনোসর বলে, বিশ্বের প্রতিটা দেশের সরকার জীবাশ্ম জ্বালানীর জন্য শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। তাদের উদ্দেশে ডাইনোসরের বক্তব্য এত বিলিয়ন ডলারের জ্বালানী দিয়ে যেভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, তাতে অবলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে জীব বৈচিত্র। সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশেরই দরিদ্র মানুষের বসবাস। সরকারের উচিৎ জীবাশ্ম জ্বালানীর পেছনে খরচ না করে এই অর্থ সেই দরিদ্র পরিবারের জন্য খরচ করা উচিৎ যাদের এর প্রয়োজন আছে। এভাবে দেশের অর্থনীতি পুনর্নির্মাণ করা যাবে এবং যে কোনও মহামারীকে দূর করা সম্ভব হবে। “বিলুপ্তি বেছে নেবেন না। খুব দেরি হয়ে যাওয়ার আগে আপনারা নিজেরা নিজেদের প্রজাতিকে সংরক্ষণ করুন। এখন সময় আছে, কোনও রকম অজুহাত না দেখিয়ে নিজেদের পরিবর্তন করার”, বলে সেই ডাইনোসর।
According to @IMFNews, the world's governments are spending USD 11 million a minute to support fossil fuels which cause heat-trapping greenhouse gas emissions. #DontChooseExtinction, says @UNDP ahead of #COP26. pic.twitter.com/0jK4JBSFEd
— UN Climate Change (@UNFCCC) October 27, 2021