শরীরকে শক্তি ও আকার দেয় হাড়।তাই হাড় যাতে সুস্থ থাকে তা অত্যাবশ্যক। হাড় শরীরকে শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করে এবং শরীরের ভিতরে থাকা অঙ্গ প্রতঙ্গগুলিকে বাইরের যে কোনও আঘাত থেকে রক্ষা করে। এখানেই শেষ নয় হাড় আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ খনিজের জন্য একটি ব্যাংক হিসাবে কাজ করে, যেমন ক্যালসিয়াম, যা শরীরের একাধিক কার্যকলাপে সমর্থন সাহায্য করে।
হাড়ের গঠন কীভাবে হয়
হাড় প্রোটিন এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম(calcium), ফসফেট(phosphate) এবং ম্যাগনেসিয়াম(magnesium) দ্বারা গঠিত। কোলাজেন(collagen), এক ধরনের প্রোটিন, যা একটি সিমেন্টিং পদার্থ, হাড়ের গঠন এবং শরীরের কাঠামো গঠন করে। এই হাড়গুলি জীবিত এবং ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়, নতুন হাড় তৈরি হয় এবং পুরনো হাড় হারিয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে, সম্পূর্ণ কঙ্কাল প্রতি ৭-১০ বছরে সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপিত হয়।
ডায়েট এবং হাড়ের স্বাস্থ্য
হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়ামের(calcium) প্রয়োজন। হাড় শরীরের 99% ক্যালসিয়াম ধারণ করে। ক্যালসিয়াম ভাল রাখতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির মধ্যে রয়েছে ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ফ্লোরাইড এবং ভিটামিন কে। শরীরের ৯৯ % ক্যালসিয়াম, ৬০% ফসফরাস, ৮৬ % বোন মেট্রিক্সে(bone matrix) থাকে। এই তিনটে উপাদানের এই পরিমাণ কম বেশি হলেই সমস্যার সৃষ্টি হয়।
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হল দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার। আর খাবার থেকে ক্যালসিয়াম শুষে নিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ডি(vitamin d)-র প্রয়োজন। এদিকে এই ভিটামিন ডি-র প্রধান উৎস হল সূর্যের আলো। এই আলো শরীরকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি প্রদান করে যা ত্বকের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।
এই প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানগুলি ফোর্টিফাইড দুধ(fortified milk), ভিটামিন ডি-ফর্টিফাইড খাবার(Vitamin D fortified food) এবং চর্বিযুক্ত(fatty acids) মাছ খেলে পাওয়া যেতে পারে।
এই সব কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাড় (Causes of Bone Loss/Damage )
জেনেটিক(Genetic): অনেক ক্ষেত্রে পরিবারে সূত্রে হাড়ের ব্যাধি দেখা যায়। পরিবারে বাবা-মা বা হাড়ের সমস্যা থাকলে হাড়ের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
খ্যাদ্যাভাস(Food Habits): সুস্থ হাড়ের জন্য পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি প্রয়োজন। নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারে দীর্ঘদিনের অভাব থাকলে হাড়ের সমস্যা থাকতে পারে। মাত্রাতিরিক্ত ধুমপান ও মদ্যপান হাড় ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
শরীরচর্চা অভাব(Lack of Exercise): নিয়মিত ব্যায়াম এবং শারীরিক কার্যকলাপ হাড়কে শক্তিশালী করে। তাই সক্রিয় জীবনযাপন ও শরীরচর্চার অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্যক্ষয় হয় হাড়ের।
বয়স(Ageing): বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের শক্তি কমতে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়সের কারণে হাড়ের শক্তি হ্রাসের সম্ভাবনা অনেক বেশি। বিশেষ করে মেনোপজে পৌঁছানোর সঙ্গে হাড়ের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
শরীরের আকার (Body frame): পাতলা এবং কম ওজনের মহিলাদের হাড় দুর্বল হয়।