সপ্তাহের শুরুতেই এক ধাক্কায় তিন ডিগ্রি নেমেছে পারদ। মাঝ ডিসেম্বরেই কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে জাঁকিয়ে পড়তে চলেছে শীত। কিন্তু শীতের আমেজে গা ভাসিয়ে বেহিসেবি হলে চলবে না। সুস্থ থাকতে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে নিত্য জীবনযাপন৷ নইলে বাড়তে পারে স্ট্রোকের (stroke)সমস্যা। শীতকালে কয়েকগুন বেড়ে যায় স্ট্রোকের প্রবণতা। এই নিয়ে কলকাতা টিভি ডিজিটালের প্রতিনিধি সুদেষ্ণা নাথের সঙ্গে কথা বললেন বিশিষ্ট নিউরো সার্জন সুনন্দন বসু (Neuro Surgeon Dr Sunandan Basu)।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে কি বেড়ে যায় স্ট্রোকের সম্ভাবনা? (Stroke are common in winters, myth or truth?)
গ্রীষ্মকালের তুলনায় বসন্ত ও শীতকালে বেড়ে যায় স্ট্রোকের প্রবণতা। বিশেষ করে শীতকালে, ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে থাকা রক্তনালী সংকোচনের ফলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। স্ট্রোকের অন্যতম কারণ এই উচ্চ রক্তচাপ। এদিকে প্রচণ্ড ঠান্ডায় আবার রক্ত গাঢ় হয়ে কিছুটা চিটচিটে হয়ে যায়। এর ফলে বেড়ে যায় রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনাও। এই রক্ত জমাট বাঁধার কারণেও স্ট্রোক হয়। এ ক্ষেত্রে রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটায় স্ট্রোক হয়।
তবে শুধু ঠান্ডা আবহাওয়ায় নয়, ঘন ঘন আবহাওয়ার তারতম্যেও সমস্যা দেখা যায়। এই সময় আবহাওয়ায় আর্দ্রতার মাত্রা খুব বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেকের মধ্যে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা যায়। এই ডিহাইড্রেশনের আবার রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে কয়েকগুণ। এর ফলে বাড়ে স্ট্রোকের প্রবণতা।
স্ট্রোকের লক্ষণ (Common symptoms of Stroke )
শরীরের কোনও একদিকের মুখে, বাহুতে কিংবা পায়ে ক্লান্তি ভাব বা আচমকা অসাড় হয়ে পড়া
কথা বলতে গিয়ে আচমকা সমস্যা সৃষ্টি কিংবা অন্যের কথা বুঝতে অসুবিধে।
কোনও একটি চোখে দেখার অসুবিধে কিংবা বিশেষ কোনও কারণ ছাড়াই আচমকা মাথা যন্ত্রণা।
পা টলে যাওয়া কিংবা হাঁটতে সমস্যা।
তবে স্ট্রোকের অধিকাংশ লক্ষণ অন্যান্য অনেক রোগের লক্ষণের মতোই৷ তাই এ ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তির স্ট্রোক হওয়ার আগের মুহূর্তে বোঝা বেশ কঠিন। তাই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। পাশাপাশি যাতে শরীর স্ট্রোকের অবস্থায় না যায় সেদিকেও নজর দিতে হবে। খাওয়াদাওয়া ও নিত্য জীবণযাপন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
স্ট্রোক এড়ানো কতটা সম্ভব? (How to protect yourself from stroke)
একটা সময় বয়সজনিত কারণে বয়স্কদের মধ্যে স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকত বেশি। তবে ইদানীং অনিয়ন্ত্রণিত জীবনের সাইড এফেক্ট হিসেবে স্ট্রোকের কারণে মুত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন তিরিশ-চল্লিশের যুবক-যুবতীরাও। রয়েছে শরীরচর্চার অভাবও। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়-
তাই বছরের এই সময়ে বিয়েবাড়ি, বড়দিন ও নতুন বছর উদযাপনের এলাহি খাওয়াদাওয়া কিংবা মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান বা ধূমপানে ও শরীরচর্চার অভাবে ধমনির ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, ব্যাহত হয় রক্ত চলাচল, বেড়ে যায় স্ট্রোকের সম্ভাবনা।
তাই এই বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই স্ট্রোকের পরিস্থিতি এড়ানো যাবে।