নয়াদিল্লি: প্রতি ৮ ঘণ্টা অন্তর মাস্ক বদল করতে হবে৷ একই সঙ্গে পুরনো মাস্ক নষ্ট করে ফেলতে হবে৷ হু হু করে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ রুখতে এই নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় সরকার (Ministry of Health and Family Welfare) ) ৷ বুধবারের নির্দেশাবলীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, মাস্ক-স্যানিটাইজার ও দূরত্ববিধি- এই তিনমন্ত্রে ওমিক্রন (Omicron) বা করোনার(Corona) অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের সহজেই মুক্তি মিলবে৷
নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী, আর ১৪ দিনের পরিবর্তে জ্বর না এলে মাত্র ৭ দিনেই শেষ হবে আইসোলেশন (Home Isolation)। আইসোলেশন শেষ হওয়ার পরে নেগেটিভ টেস্ট করারও প্রয়োজন নেই। যদিও এইচআইভি, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী এবং যাদের অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে তাঁরা এই গাইডলাইনের আওতায় পড়বেন না।
রোগীর জন্য কী কী নির্দেশাবলী দিয়েছে কেন্দ্র-
i) রোগীকে সব সময় ট্রিপল লেয়ার (ত্রিস্তরীয় মেডিকেল) মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্কটি ব্যবহারের ৮ ঘন্টা পরে বা তার আগে মাস্কটি ভিজে গেলে বাতিল করতে হবে৷ কিংবা দেখতে নোংরা হয়ে গেলে অবশ্যই মাস্কটি বাতিল করা উচিত। হাসাপাতালে অন্যান্য রোগী থাকলে উভয় গোরীকে এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহারে জোর দিতে হবে৷
ii) ব্যবহারের পর টুকরো টুকরো করে কেটে কাগজের ব্যাগে ন্যূনতম ৭২ ঘণ্টা রাখার পর মাস্ক ফেলে দিতে হবে।
iii) রোগীকে অবশ্যই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। আলাদা ঘরে থাকতে হবে৷ বিশেষ করে বয়স্ক এবং যাঁরা অসুস্থ যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, রেনাল ডিজিজ ইত্যাদিতে আক্রান্তদের থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে৷ অন্যথা, তাঁরা সমস্যায় পড়তে পারেন।
iv) রোগীকে ক্রস ভেন্টিলেশন অর্থাৎ তাজা-বাতাসবাহী ঘরে থাকতে হবে। তাজা বাতাস আসতে দেওয়ার জন্য জানালা সর্বক্ষণ খোলা রাখতে হবে। তবে, শীতের সময় ঠান্ডা না লেগে যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
v) শরীরে জলের মাত্রা ঠিক রাখতে হবে৷ রোগীকে অবশ্যই বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রচুর পানীয় জল বা সুপ পান করতে হবে।
vi) সর্বদা শ্বাস প্রশ্বাসের নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
vii) কমপক্ষে ৪০ সেকেন্ডের ধরে সাবান এবং জল দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া বা অ্যালকোহল-ভিত্তিক স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
vii) রোগীরা বাড়ির অন্যান্য লোকেদের সঙ্গে বাসনপত্র-সহ ব্যক্তিগত জিনিস আলাদা করে নেবেন৷
ix) সাবান/ডিটারজেন্ট এবং জল দিয়ে ঘরের ঘন ঘন স্পর্শ করা জায়গা (টেবিল, দরজার নব, হাতল ইত্যাদি) বাধ্যতামূলক পরিষ্কার করতে হবে। মাস্ক এবং গ্লাভস ব্যবহার করার মতো প্রয়োজনীয় সতর্কতাগুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করে রোগী বা পরিচর্যাকারী দ্বারা পরিষ্কার করা যেতে পারে।
x) রোগীর জন্য একটি পালস অক্সিমিটার দিয়ে রক্তের অক্সিজেন স্যাচুরেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ রোগী নিজেও সেটা করতে পারে৷ প্রতিদিনের শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে হবে রোগীকে৷ উপসর্গের কোনও অবনতি লক্ষ্য করা গেলে দ্রুত রিপোর্ট করতে হবে।
এছাড়াও এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে, যে সব করোনা রোগীদের সামান্য জ্বর কিংবা বা জ্বর নেই মৃদু উপসর্গ রয়েছে, যাঁদের শ্বাস জনিত সমস্যা নেই অর্থাৎ অক্সিজেন লেভেল যাদের ৯৩ শতাংশ বা তার উপরে থাকবে তারাই শুধুমাত্র হোম আইসলেশনে থাকতে পারবেন।
পরিবারের এক সদস্যের করোনা হলে বাকিদেরও আইসলেশনে থাকতে হবে। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। মৃদু উপসর্গ থাকার পরেও রোগীর অক্সিজেন লেভেল কমে গেলে তাঁকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন- Covid guidelines: কোভিডের এই সাত লক্ষণে সাবধান! নতুন গাইডলাইনে সতর্ক করল কেন্দ্র
হোম আইসোলেশনে থাকলেও মানতে হবে বেশ কিছু বিধি। ব্যবহার করতে হবে আলাদা শৌচালয় ব্যবহার করতে হবে। আলো-বাতাস চলাচল করে এমন ঘরে থাকতে হবে রোগীকে।
এছাড়াও এই নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী, আক্রান্তদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাঁদের শরীরে কোনও রকমের উপসর্গ না থাকলে তাঁদের ক্ষেত্রেও কোভিড টেস্ট (Covid19) জরুরি না, শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেই চলবে।