পুজো এসে গিয়েছে। তিন তিনটে গান একসঙ্গে সুরভি ছড়াচ্ছে। ভাঙা রেকর্ডের মত বেজেই চলেছে। অনবরত। এক, রাণু মণ্ডলের ‘মানিকে মাগে হিতে।’ দুই, মিস্টার মদন মিত্রের, ‘জাগো-ও-ও-ও-ও তুমি জা-আ-আ-আ-গো-ও-ও-ও মা-আ-আ-আ।’ আর একটা? আর একটা ‘তা-তা থই থই, তা-তা থই থই, তা-তা থই থই’…শেষ গানটা অবশ্য শুধু শুনলে হবে না, দেখতেও হবে।
কেন দেখতেই হবে? কারণ না দেখলে এক বিরল কৌতুক থেকে বঞ্চিত হবেন আপনি। না না, রংমিলান্তি কপোত-কপোতির পৃথুলা শরীরের নৃত্যভঙ্গীমা নিয়ে এখানে বিশেষ লেখার নেই। ওই যে আপনারা ট্রলের ধারাবাহিক উপন্যাস নামিয়ে দিয়েছেন, এই বলে যে, ‘বাব্বা কী কুচ্ছিত’। ‘আনকুথ’ বলে। ‘এ বাবা দেখেছ কী কাণ্ড’ বলে। এখানে তা বলতে আমরা আসিনি। মোটা মানুষেরা ‘ট্যাঙ্গো’ করবেন নাকি ‘হুলাহুপ’, নাকি ‘আও টুইস্ট করে’ বলে নিতম্ব দোলাবেন সেটা তাদের একেবারে নিজস্ব ব্যাপার। আমরা দাদার বা বৌদির বডি শেমিংয়ের বিপক্ষে। তা হলে কৌতুক কোথায়? কৌতুক জিনিসটাকে পাবলিক করানোয়। আর পাবলিক হয়েছে বলেই পাবলিকে যা খুশি তাই বলছে। লিখছে। খিল খিল করছে। রংমিলান্তি দাদা-বৌদির সম্পর্ক নিয়েও এখানে লেখার কিছু নেই। তবে আইডিয়াটা চমৎকার। বেশ সাজুগুজু করে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরিধান করে, ঘাড়ে পাওডার বুলিয়ে, ক্যামেরা রেডি করে, অ্যাকশন…মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে, তা-তা থই থই, তা-তা থই থই, তা-তা থই থই। দাদা-বৌদি আরও একবার, হ্যাঁ এখানটায় আরও একটু ঘুরে ঘুরে, দুলে দুলে, তা-তা থই থই, তা-তা থই থই, তা-তা থই থই…
আরও পড়ুন: রাইস কুকারকে বিয়ে করে চার দিনের মধ্যে ডিভোর্স দিলেন যুবক, কেন?
এত পর্যন্ত ঠিকই ছিল। তখনই বেজে উঠল জাগো জাগো-ও-ও-ও-ও তুমি জা-আ-আ-আ-গো-ও-ও-ও মা-আ-আ-আ..আবাসনের ছায়ায় একটা ষাঁড় বসে ঝিমোচ্ছিল, গানের গুঁতোয়, লেজ খাড়া করে স্পিডে দে দৌড়। ষাঁড় পালিয়ে গিয়েছে তখনও জাগোর দড়ি ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা ‘ও-কার’ দিকে দিকে ধ্বনিত হচ্ছে। নাহ্ দাদার সোয়াগ আছে বটেক। যেমন তার হুইস্কি রংয়ের চশমা. তেমন তার গলার স্বর। কিন্তু জাগোটা দাদা একটু, না একটু কেন অনেকটাই গড়বড় করে ফেলেছেন। সেই ষাঁড় আর এ দিক-মুখো হয়নি।
এ দিকে তখনও মানিকে মাগে হিতে বেজেই চলেছে। দাদা-বৌদির গৃহদাহ নাকি হাটে-বাজারে পার্ট টু মুক্তি পাবো পাবো করছে। এ বার দাদা লাল একটা জামা পরে পিয়ানোর রিডে আঙুল খেলাচ্ছেন। বৌদি বলছেন ‘এই এটা কোরো না, এটা খুব খারাপ’…দাদা অবিচল, দাদা অপ্রতিরোধ্য। নাচ গান সব করে ফেললে তো। সাধে কি আর বাংলার এক সংগীত কন্যা নিজের পোস্টে লিখেছেন ‘এতো দিনের গান গাওয়া আজ সার্থক হল।’ দু’লাইনের সেই পোস্টে পনেরো হাজার লাইক।
আরও পড়ুন: জন্মদিনে সোহিনীকে চমকে দিলেন রণজয়
গুনে দেখা হয়নি, তবে তার অধিকাংশই হা-হা ইমোজিতে ভরা। কমেন্টও পড়েছে দু’হাজারের উপরে। আর শেয়ার? এই সবমিলিয়ে চার হাজার তিনশো খানেক। কমেন্ট বক্সে ঢুঁ মেরেছিলাম। সেখানে আশ্চর্য সব মণিমুক্ত ছড়ানো। কী লেখা? না থাক। আপনারাই পড়ে দেখুন না। তা-তা থই থই, তা-তা থই থই, তা-তা থই থই…