মালদহ: কালীকে কাঁধে নিয়ে দৌড়। রাজার প্রচলিত রীতি মেনে মালদহের চাঁচলের মালতিপুরে আয়োজিত হল ঐতিহ্যবাহী কালীদৌড় প্রতিযোগিতা। মালতীপুর এলাকার আটটি কালী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে ছুটলেন এলাকাবাসী। কালীদৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে তৈরি হল সম্প্রীতির এক আশ্চর্য আবহ।
কেন এই কালীদৌড়?
জানা গিয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে, মালদহের চাঁচলের তৎকালীন রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরী চালু করেছিলেন এই প্রতিযোগিতা। দৌড়কে ঘিরে রয়েছে এক কাহিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় মালদেহের মালতিপুর এলাকায় পুষ্করিণীর সংখ্যা ছিল মাত্র একটি। মালতিপুর কালীবাড়ি লাগোয়া পুষ্করিণীতে বিসর্জন দেওয়া হতো একাধিক কালী প্রতিমা।
আরও পড়ুন: Bhratri Dwitiya 2022: জেলে কচিকাঁচাদের ফোঁটা দিলেন মহিলা পুলিশকর্মীরা, চকোলেট হাসি ফোটাল মিষ্টিমুখে
সে সময় রাজা শরৎচন্দ্র রায়বাহাদুর সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন প্রক্রিয়া করার জন্য শুরু করেছিলেন এক প্রতিযোগিতা। দীপান্বিতা অমাবস্যা অর্থাৎ কালীপুজোর পরের দিন সন্ধ্যার সময় মালতিপুর বাজারে একটি দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন তিনি। এই প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল দৌড়ে যাদের কালী প্রতিমা অক্ষুণ্ণ থাকবে, সেই প্রতিমাই প্রথম বিসর্জন দেওয়া হবে কালিদিঘিতে।
বর্তমানে নেই রাজা, নেই সেই রাজবৈভব। কিন্তু রাজার প্রচলিত রীতিনীতি আজও অব্যাহত মালতিপুরে। মালতিপুর এলাকার মোট আটটি কালীর দৌড় হয় প্রতিবছর। এদের মধ্যে রয়েছে বুড়িকালী, চুনকা কালী, বাজারপাড়া কালী, আমকালী, হ্যান্টা কালী, হাট কালী, শ্যামা কালী। পুজো কমিটি ও এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে কালী প্রতিমা কাঁধে নিয়ে ছুট দেন। আর সেই দৌড় দেখতে হাজির হন গ্রামবাসী। ঢাক-বাজনার সঙ্গে প্রতিমা ঘাড়ে করে সেই দৌড় দেখার মতো। মালতিপুর বাজার এলাকা পরিক্রমা করে কালীকে নিয়ে আসা হয় মালতিপুর কালীবাড়ি লাগোয়া দিঘিতে। সেখানেই নিরঞ্জন পর্ব সারা হয়।