এ যেন প্রয়াত কিংবদন্তি কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতার মতোই ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’র পরিস্থিতি। বিজ্ঞাপনে মণ্ডিত তিলোত্তমা কলকাতার চিত্র উঠে এসেছিল আধুনিক কবির পংক্তিগুলিতে। আর এখানে ‘মুখ’ নয়, ‘সিগন্যালের লাইট’ ঢেকে যাচ্ছে বিজ্ঞাপনে। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সদর মেদিনীপুরের অদূরে খড়্গপুর-মেদিনীপুরের সংযোগস্থলে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ চৌরঙ্গীর মোড়। একাধিক রাজ্যগামী যেমন মুম্বই, চেন্নাই, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের ৬০ নং, ৬ নং জাতীয় সড়ক মিলিত হচ্ছে এই চার মাথার মোড়ে। অত্যন্ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। নিরাপত্তার স্বার্থে বা দুর্ঘটনা রোধে, সম্প্রতি বছর তিনেক আগে এই মোড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অপরদিকে, এই চৌরঙ্গীর মোড়কে কেন্দ্র করে একটি বিবেক উদ্যানও তৈরি করে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে এম কে ডি এ’র তরফে। সেই ছোট্ট বিবেক উদ্যানের চারপাশে যে লোহার রেলিং দেওয়া হয়েছে, সেখানে বাতিস্তম্ভের সঙ্গে এম কে ডি এ’র তরফে বিজ্ঞাপনের বড় বড় হোর্ডিংও লাগানো হয়েছে। অভিযোগ যে, বিজ্ঞাপনের সেই হোর্ডিংয়ে ঢেকে যাচ্ছে সিগন্যালের আলো। গুরুত্বপূর্ণ এই চৌরঙ্গীর মোড়ে সামান্য দূর থেকেও সিগন্যাল দেখতে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ জানিয়েছেন বিভিন্ন বড় গাড়ির চালক থেকে শুরু করে বাইক আরোহীরাও। উল্লেখ্য যে, একদিকে সৌরবাতির স্তম্ভ এবং তার ওপরে সৌর প্লেট, অন্যদিকে বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের হোডিং যুক্ত স্তম্ভ।
সব মিলিয়ে, যাত্রীরা সামান্য দূর থেকেও দেখতে পাচ্ছেন না লাল আলো সবুজ আলোর সিগন্যাল। একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী তথা এই রাস্তার নিত্যদিনের যাত্রী শুভ্রকান্তি ছেত্রী অভিযোগ করলেন, ‘অনেক সময় দেখছি লাল আলো জ্বলছে, কিন্তু গাড়ি-ঘোড়া সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, আবার অনেক সময় সবুজ আলো হলেও আমরা দাঁড়িয়ে থাকছি। শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনের জন্য সিগন্যালের আলো দেখাই যাচ্ছে না।’ এই বিষয়ে, বুধবার এম কে ডি এ’র নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান তথা খড়গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায় জানিয়েছিলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এরপর, গত বৃহস্পতিবার দেখা যায়, বিজ্ঞাপনে হোডিংয়ের মুখগুলি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি। এই খবর পেয়ে চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘দফতরের সঙ্গে কথা বলে দেখছি, অন্য কিছু ব্যবস্থা করা যায় কিনা।’