বোলপুর: উপাচার্য বিতর্ক এবার শান্তিনিকেতন ছাড়িয়ে পৌঁছে গেল কেন্দ্রে। কবিগুরুর সাধের বিশ্বভারতীকে বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে আন্দোলনকারীরা চিঠি দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে। পড়ুয়াদের বহিষ্কার ও অধ্যাপক কর্মীদের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্বভারতীর আন্দোলন কর্মসূচি সোমবার দশম দিনে পড়ল। রবিবার থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পরিবর্তিত হয়ে যায় অনশনে। অর্থনীতি বিভাগের সাসপেন্ড অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য ও সঙ্গীত ভবনের বহিস্কৃত ছাত্রী রুপা চক্রবর্তী অনশনে বসেছেন। তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই অনশন চলতে থাকবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
বেশ কয়েক বছর আগে বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি উপাচার্যের আসনে বসার পর থেকেই বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রবীন্দ্রনাথের সাধের শান্তিনিকেতনকে। রবীন্দ্রনাথ জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন শান্তিনিকেতনে। সেই শান্তিনিকেতনেই নাকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “বহিরাগত”। এ ধরনের বিভিন্ন মন্তব্য করে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
শুধু বিতর্কিত মন্তব্যই নয় তাঁর কাজকর্মের প্রতিবাদ করায় ১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে আগেই সাসপেন্ড করেছিল বিশ্বভারতী। এছাড়াও অর্থনীতি এবং সংগীত বিভাগের মোট ৩ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। পরবর্তীতে সাসপেনশনের মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। সম্প্রতি তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: মানবাজারের মহকুমা শাসককে খুনের হুমকি, মাওবাদীদের পোস্টারকে ঘিরে শোরগোল
২৭ অগস্ট থেকে টানা দশ দিন ধরে বিশ্বভারতীর উপাচার্য নিজের বাসভবনে রয়েছেন। তাঁর বাড়ির সামনেই বিক্ষোভে বসেছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। দিন দুয়েক আগে অভিযোগ উঠেছিল ঘেরাও করে রাখার ফলে উপাচার্য ও তাঁর পরিবারের লোকেরা খাবার পাচ্ছেন না। এরপর ছাত্রছাত্রীরাই উপাচার্যের বাড়িতে তিনবেলা নিয়ম করে খাবার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ দাবি না মানা পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হবে না এই কর্মসূচি। তাঁদের সমর্থন জানিয়েছে জেলা তৃণমূল সহ বাংলার বেশ কিছু নাগরিক সমাজ সংগঠন।
বিতর্ক এতই চরমে ওঠে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে মামলা করা হয় হাইকোর্টে। সেই মামলা এখনও চলছে। ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের দাবিতে অনড়। তাঁদের সঙ্গে কোনও আলাপ আলোচনায় যেতে রাজি নন উপাচার্য। এবার তাঁরা দ্বারস্থ হল শিক্ষামন্ত্রীর। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে চিঠি লিখে আন্দোলনকারীরা জানান, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষা করুন। রবীন্দ্রনাথের আদর্শ ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনুন। মোট ৮ দফা দাবি জানিয়ে এদিন শিক্ষামন্ত্রীকে মেল করেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তারক্ষী মৃত্যু মামলার তদন্তে রক্ষাকবচ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন শুভেন্দুর, দুপুরে শুনানি