জলপাইগুড়ি: অবশেষে তিনদিন পর ডুয়ার্সের রেড ব্যাঙ্ক চা বাগান থেকে হস্তি শাবকের দেহ উদ্ধার। সোমবার সকালে বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ডলাইফ স্কোয়াডের বনকর্মীরা ওই শাবকের দেহ উদ্ধার করেন। তিনদিন ধরে মৃত শাবককে আগলে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছিল মা হাতি। শুধু মা হাতি নয়। ওই মৃত শাবকটিকে আগলে রেখেছিল আরও ত্রিশ-পয়ত্রিশটি হাতির দল। ফলে কোনও ভাবেই মৃত হস্তিশাবকে উদ্ধার করতে পারছিল না বন দফতর। শুক্রবার সকাল থেকেই এমন মন কেমনের দৃশ্য দেখা গিয়েছিল ডুয়ার্সে।
শুক্রবার সকালে বানারহাটের আমবাড়ি চা বাগানের বাসিন্দারা লক্ষ্য করেন, একটি হাতি অনেকক্ষণ ধরে জঙ্গলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে একটি সদ্যোজাত বাচ্চা। তবে, বাচ্চাটি জীবিত নয়। মৃত। এরপরেই শুঁড়ে করে ওই মৃত হস্তিশাবকে ৬ কিলোমিটার দূরে রেড ব্যাঙ্ক চা বাগানে নিয়ে আসে মা হাতিটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতানুসারে, সম্ভবত বৃহস্পতিবার রাতেই মৃত্যু হয়েছে হস্তিশাবকটির। তবে, শুক্রবার সকালে শাবক হাতিকে শুড়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নজর পড়ে।
তারপরই ওই মৃত হস্তি শাবককে উদ্ধারের চেষ্টা করেন বনকর্মীরা। কিন্তু কোনও ভাবেই নিজের মৃত সন্তানকে ছাড়তে নারাজ মৃত হাতিটি। হাতিটির মানসিক অবস্থা বুঝে কোনও ভাবেই মৃত শাবকটির দিকে এগোতে পারছিলেন না বনকর্মীরা। তবে, হাতিটির উপরে লাগাতার নজরদারি চালানো হচ্ছিল৷ হাতিটির গতিবিধি লক্ষ্য করতে ওড়ানো হয়েছিল ড্রোনও।
রবিবারও একই চিত্র ছিল ওই চা বাগানে। দুপুরের পর সঙ্গী হাতিগুলি ছেড়ে চলে গেলেও সেখান থেকে এক পা নড়েনি মা হাতি। শেষমেশ সোমবার সকালে হস্তি শাবকের দেহ ছেড়ে কিছুটা দূরে চলে যায় মা হাতি। আর তখনই উদ্ধার করা হয় শাবকের দেহ। ময়নাতদন্তের পর শাবকের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।