বারাসত: দশ বছর ধরে ডান চোখে দৃষ্টি নেই৷ বা চোখ দিয়ে লেখাপড়া করে এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশংসনীয় ফল করেছেন বারাসত হৃদয়পুরের রজত ভট্টাচার্য৷ শুক্রবার ফল ঘোষণার পর চোখ হারানোর যন্ত্রণার কথা জানালেন উচ্চমাধ্যমিকে সফল পরীক্ষার্থী৷ বাজি পোরাতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল একটি চোখ৷ অন্য চোখ দিয়ে পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিকে ৩৮৯ নম্বর পেয়েছেন রজত৷ ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা অশোক ভট্টাচার্য৷ তিনি জানান, কোনও গৃহশিক্ষক ছাড়াই এক চোখ নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে এই ফল করেছে ছেলে৷ যদি দুটো চোখ ঠিক থাকত তাহলে ছেলে ব়্যাঙ্ক করত বলে তাঁর বিশ্বাস৷
বাবা রেশন দোকানের কর্মচারী৷ পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা নেই বললেই চলে৷ টাকা-পয়সার অভাবে তাই ছেলেকে কোনও গৃহশিক্ষকের কাছে ভর্তি করাতে পারেননি৷ তবুও রজতকে পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন অশোকবাবু৷ জানান, ছেলে পড়াশোনায় ছোট থেকেই ভালো৷ কোনও শিক্ষক না থাকলেও পরিচিত দাদাদের সাহায্য পেয়েছে৷ কোথাও সমস্যা হলেই দাদারা রজতকে সহযোগিতা করত৷ আক্ষেপের সুরে জানান, সরকারি কোনও সাহায্য তাঁরা পান না৷ কথায় কথায় তিনি আরও বলেন, ‘২০১২ সালে দুর্গাপুজোর সময় বাজি পোরাতে গিয়ে ছেলের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ ওই চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পায় না৷’ তারপরেও ছেলের এই নম্বর দেখে তিনি ভীষণ খুশি৷
বাবার মতো রজতও মনে করেন, তাঁর দুটো চোখে দৃষ্টিশক্তি থাকলে তিনি পরীক্ষায় ব়্যাঙ্ক করতেন৷ গ্র্যাজুয়েশনের পর তাঁর ডব্লুবিসিএস পড়ার ইচ্ছা৷ ছেলের ইচ্ছের কথা শুনে বাবা বলেন, ‘রজত যতদূর পড়তে চায় আমি পড়াব৷ আমি সবসময় ছেলের পাশে আছি৷ ছেলের সাফল্যে পরিবারের সবাই আনন্দিত ও উৎসাহিত’৷