বাঁকুড়াঃ অন্ধকারের মায়া কাটিয়ে উঠতে পারল কি আজকের সমাজ ?
মেয়ে হোক চাননি বাবা । তাই প্রথম থেকেই অশান্তি ৷ শেষে ১৬ দিনের মেয়েকে কুয়োয় ফেলে খুন করে, ধানের জমিতে পুঁতে শান্তি পেলেন বাবা । আর নির্দেশ না মানায় বউকে ঘরে আটকে শাস্তি দিতেও ভুল করেননি স্বামী ৷ ঘটনাটি বাঁকুড়ার ছাতনার তুলসা গ্রামে ।
বছর চার আগে পুরুলিয়ার কাশিপুরের ভাতুইকেন্দ গ্রামের সোহাগি সোরেনের সঙ্গে বাঁকুড়ার আশ্বিনাথ সোরেনের বিয়ে হয় । আড়াই বছর মাথায় প্রথম সন্তান ৷ সেটি মেয়ে ৷ জম্মের দিন থেকেই তাই বাবার মেজাজটা ঠিক ছিল না ৷ তাও মেনে নিয়েছিল ৷ ঠিক করেছিল, পরের বার ‘ক্ষতি-পূরণ’ করে নেবেন ৷
আরও পড়ুন সল্টলেকের গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ! কী কারণে মৃত্যু? উঠছে প্রশ্ন
চেষ্টার শুরু হয় ৷ সন্তানসম্ভবা হন সোহাগি ৷ আশার আলো দেখেন আশ্বিনাথ ৷ কিন্তু, খুশি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি ৷ এ বারও সেই মেয়ে ৷ আর মেজার ঠিক রাখতে পারেননি আশ্বিনাথ ৷ দ্বিতীয় মেয়েকে মেরে ফেলতে চান ৷ বউকে নির্দেশও দেন ৷ বেঁকে বসেন সোহাগি ৷ নিজেই খুন করার ছক কষে ফেলেন আশ্বিনাথ । বেশ কয়েক বার শিশুটাকে ছুড়ে ফেলার চেষ্টা করেন ৷ বউয়ের বাধায় সাফল্য আসেনি ৷ তখনই ‘অবাধ্য’ বউয়ের অবর্তমানে খুনের ছক করেন আশ্বিনাথ ৷
আরও পড়ুন বাবা-মেয়ের বিয়ে! ভাইরাল ছবির আসল সত্য সামনে এল
সুযোগও আসে ৷ গত ৯ অক্টোবর, সোমবার সোহাগি শিশুটিকে রেখে কাজে বের হয়েছিলেন ৷ সেই সুযোগে একরত্তিকে বাড়ির কুয়োয় ফেলে দেয় বাবা। এর পর শিশুর নিথর দেহ ভেসে উঠলে প্রমাণ লোপাট করতে দেহটি প্লাস্টিকে মুড়ে গ্রাম থেকে ২ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে একটা ধানের জমিতে পুঁতে দেন ।
আরও পড়ুন দু’ঘণ্টা জেরার পর এনসিবি দফতর থেকে বেরোলেন অনন্যা পাণ্ডে, শুক্রবার ফের হাজিরা
বাড়ি ফিরে মেয়েকে না দেখতে পেয়ে খোঁজ শুরু করেন সোহাগি । প্রশ্ন করতেই ঘরে বন্দি করে দেন স্বামী ৷ টানা ১০ দিন গৃহবন্দি ৷ শেষে ১৮ অক্টোবর কোনও রকমে বাপের বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেন সোগাহি ৷ ছাতনা থানায় অভিযোগ দায়ের হয় । অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। আশ্বিনাথকে গ্রেফতার করা হয় । জেরায় মেয়ে খুনের কথা স্বীকার করে আশ্বিনাথ ৷
বয়ান মতো, শিশুটিকে মাটি খুঁড়ে তোলা হয় ৷ আজ, বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া আদালতে আশ্বিনাথকে তোলা হয় । ১৪ দিনের জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেয় বাঁকুড়া জেলা আদালত।