হাওড়া: তিন দিন পেরিয়ে প্রায় চারদিন হতে চলল৷ এখনও খোঁজ মিলল না শীতবস্ত্র কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া একই পরিবারের ৩ জনের৷ যে কারণে পরিবারের বাকি সদস্য চরম উদ্বিগ্নে রয়েছেন৷ নিখোঁজদের কোনওভাবে কিনারা না করতে পেরে চিন্তিত পুলিসও৷
গত ১৫ ডিসেম্বর বেলা বারোটায় শপিং করতে বাড়ি থেকে বের হন নিশ্চিন্দার আনন্দনগরের কর্মকার পরিবারের তিন জন। তারপর আর কোনও সন্ধান নেই তাঁদের।
পারিবার ও পুলিস সূত্রে খবর, নিখোঁজদের শেষ মোবাইল টাওয়ার লোকেশন শ্রীরামপুরের রায় এমসি ভাদুড়ি লাহিড়ী স্ট্রিটে পাওয়া গেছে। যদিও ওই অঞ্চলে পৌঁছে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিস৷ কারণ, দীর্ঘদিন সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি খারাপ রয়েছে৷ যা নিয়ে পুলিস-প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ৷
আরও জানা গিয়েছে, কর্মকার পরিবারের তিন সদস্য নিখোঁজ হওয়ার দিন সকালে অন্য একটি ফোন নম্বর থেকে বেশ কয়েকবার পরিবারের ছোট বউয়ের মোবাইলে ফোন আসে। সেই মোবাইল নম্বরটির ঠিকানায় পৌঁছয় পুলিস৷ চন্দননগরে ওই ঠিকানা কর্মকার পরিবারেরই আত্মীয়র ফোন নম্বর। কার্যত সবদিক থেকে পুলিস অন্ধকারে রয়েছ৷ কোনও কিছুই জানতে পারছে না৷
বর্তমানে শ্রীরামপুর থানার সহযোগিতায় বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে৷ খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি৷
পরিবারের তরফে ১৫ ডিসেম্বর রাতে নিশ্চিন্দা থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই তিনজন ট্রেনে চেপেছিলেন কি না, তা দেখার জন্য স্টেশন সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভির ফুটেজের উপর জোর দিচ্ছে পুলিস।
নিখোঁজ দুই মহিলার পরিবার সূত্রে খবর, কোনওরকম পারিবারিক অশান্তি হয়নি। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথাও জানা ছিল না কারুরই। টাকা চেয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও হুমকি ফোনও পাননি বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। দুই মহিলার পরিবারের সদস্যরা বারংবার থানায় এলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সূত্র পায়নি পুলিস।
আরও পড়ুন-ভোট চলাকালীন প্রতি ঘণ্টায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রিপোর্ট, নির্দেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের
স্থানীয় সূত্রের খবর, পরিবারের ছোট ছেলে দুবাইয়ে সোনার কাজ করতেন। গত বছর লকডাউনের সময় কাজ চলে যায়। বাড়িতে ফিরে ছোটোখাটো কাজকর্ম শুরু করেন। বড় ছেলে একটি বেসরকারি সংস্থায় ডেলিভারি বয়ের কাজ করেন। বড় বউয়ের কোনও সন্তান নেই। ছোট ছেলের একটিই সন্তান।
নাতিসহ দুই বউমা রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন বাড়ির কর্ত্রী রীতা কর্মকার।তিনি জানান, বড় বউমা সন্তানের জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। অনেক জায়গায় গিয়েছে সন্তানের আশায়।তাঁর আশঙ্কা, বড় বউমা কোনও চক্রের ফাঁদে পড়তে পারে।