Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: কেন্দ্রীয় সরকার, আর নেই দরকার
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন, ২০২১, ১১:৪৪:৩১ পিএম
  • / ৮৫৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

নুসরত, যশ, নিখিল, কাঞ্চন, পিংকি শ্রীময়ী নিয়ে আমাদের কলতলার গসিপ ও সাংবাদিকতা যখন রোমাঞ্চিত, সেই ফাঁকতালে চুপিসাড়ে একটা ঘটনা দেশে ঘটে গেলো, কেউ খেয়ালই করলো না, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে আগামি কয়েকমাসের মধ্যেই এই ফুলকি, এই স্ফুলিঙ্গ এক বহ্নিশিখা হয়ে উঠবেই, মিলিয়ে নেবেন। তামিলনাড়ুর নব নির্বাচিত সরকার সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট, কেন্দ্রীয় সরকার কথাটা থেকে সেন্ট্রাল বা কেন্দ্রীয় কথাটা ব্যবহার করা বন্ধ করলেন,বা বলা ভাল তুলে দিলেন। সরকারের সিদ্ধান্ত, মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্তালিনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে তাঁরা ওই সেন্ট্রালের বদলে ইউনিয়ন লিখবেন, ইউনিয়ন গভর্নমেন্ট, বা যুক্তরাষ্ট্র সরকার কথাটা ব্যবহার করবেন। কোন সময়ে? যখন ক্রমশ ক্রমশ ওই তথাকথিত ‘কেন্দ্র সরকার’ রাজ্যের সমস্ত অধিকারের ওপরে নাজায়েজ হস্তক্ষেপ করছে, তাদের পোষা সাদা হাতিকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, রাজ্যের শান্তি শৃঙ্খলাকে নষ্ট করতে, যখন ক্রমশই কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজ্যের থেকে আদায় করা ট্যাক্স, রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, হেয় করা হচ্ছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, আমলা বা সাধারণ মানুষকে, যখন রাজ্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক আইন যা রাজ্যের মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী, রাজ্যের ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতিকে চুলোর দোরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, ঠিক তখন তামিলনাড়ু সরকার সিদ্ধান্ত নিল এক্কেবারে শেকড়ে আঘাত করার, মোদী শাহকে বুঝিয়ে দেওয়া যে, সংবিধান আমাদের দেশকে এক ইউনিয়ন অফ টেরিটরিস বলেছে, এক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকেই গড়ে তুলতে চেয়েছে।
সংবিধানের আর্টিকল ১ এ পরিস্কার বলা আছে, India, that is Bharat, shall be a Union of States. মানে? মানে হল ভারতবর্ষ হল বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের এক যুক্তরাষ্ট্র। কেবলমাত্র শাসন চালানোর জন্য সেই যুক্তরাষ্ট্রের এক সরকার আছে, অঙ্গরাজ্যের সরকার তো আছেই, তারা দু’জনে মিলে এই দেশ চালাবে। আজ্ঞে হ্যাঁ, যদি আপনি ভারতবর্ষের সংবিধানের ৮ টা সিডিউল, ২২ টা অধ্যায় বা ৩৯৫ টা আর্টিকল ঘেঁটে দেখেন, মানে ছানবিন করেন, তাহলেও আপনি ওই সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট কথাটা, কেন্দ্রীয় সরকার কথাটা পাবেন না। সংবিধান বলছে দেশে দু ধরণের সরকার আছে, প্রথমটা হল যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার যা নাকি রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রিসভা দিয়ে চলবে, অন্যটা হল অঙ্গরাজ্যের সরকার, সেখানকার মানুষের নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভা চালাবে। খেয়াল করুন, এখানে কোনো মিডিয়া ক্যাংলা দলবাজ ধনকড়দের কথাও বলা নেই। রাজ্যপাল ওই যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের এক অ্যাপেন্ডিক্স টাইপের অঙ্গ, যা তাঁরাই নিয়োগ করেন, সেই তিনি বা সফেদ হাতি ওই যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের প্রধান, মানে রাষ্ট্রপতিকে রাজ্যের খবর জানান, ট্যুইট করে নয়, রাষ্ট্রপতিকে সরাসরি জানানোর কথা। কিন্তু আজ প্রশ্ন সেটা নয়, প্রশ্ন হল, তাহলে এই সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট, কেন্দ্রীয় সরকার কথাটা এল কেন? ১৯৪৬ এ ১৩ ডিসেম্বর জওহরলাল নেহেরু, সংবিধান সভায় বললেন, ভারত হল বিভিন্ন অঙ্গরজ্যের এক সম্মেলন, যা নাকি এক যুক্তরাষ্ট্রীয় স্বাধীন সরকারের জন্ম দেবে। বারবার এই যুক্তরাষ্ট্রের কথা আসছে, অথচ আমরা শুরু থেকে যক্তরাষ্ট্রের সরকারকে কেন্দ্র সরকার বলে চলেছি, এবং এই বলার ফলে কোথাও যেন এক প্রভুত্ব, এক আরও বড় ক্ষমতার জন্ম নিয়েছে, যেন কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকারকে চালাবে, তারাই রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রক এমন এক ধারণা আমাদের মনে মধ্যে গেঁথে গেছে। আর সেই ভ্রান্ত ধারণা থেকেই আরও কড়া নির্যাস নিয়ে মোদী সরকার এক কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারের জন্ম দিচ্ছে, যাকে মাত্র গতকাল আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সেলফিস জায়েন্ট বলেছেন। দেশে দু ধরণের সরকার আছে বলেই তাদের কাজের সুবিধের ভিত্তিতেই সংবিধান প্রণেতারা তিনটে লিস্ট তৈরি করেছেন, অঙ্গরাজ্যের জন্য আলাদা, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য আলাদা আর একটা তালিকা যা দুজনেই দেখবে। তো এই তালিকা তৈরির সময়ে দুজন মানে এই অঙ্গরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব দেখে করা হয়নি, সুবিধে দেখে করা হয়েছে।
ধরুন পাবলিক হেলথ, এটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে দেখাশুনো করা সম্ভব নয়, তাই এটা অঙ্গরাজ্য দেখবে, কৃষি অঙ্গরাজ্য দেখবে, এক্সাইজ ডিউটি, ট্রেড অ্যান্ড কমার্স, মৎসদফতর এগুলো অঙ্গরাজ্যের সরকার দেখবে। অন্যদিকে সবকটা অঙ্গরাজ্যকে সুবিধে দেবার জন্য অর্থ দফতর বা সুরক্ষা দেবার জন্য সৈন্য ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার দেখবে, কিন্তু পুলিশ দেখবে অঙ্গরাজ্যের সরকার। আবার শিক্ষা, আইন, বন্দর, ট্রেড ইউনিয়ন ইত্যাদির মতন বিষয় দেখবে দুজনে মিলে। এগুলো সুবিধের দিক থেকে ভাবা হয়েছে, গুরুত্বের দিক থেকে নয়। বি আর আম্বেদকর খুব পরিস্কার বলছেন, “the Union is not a league of States, united in a loose relationship; nor are the States the agencies of the Union, deriving powers from it. Both the Union and the States are created by the Constitution, both derive their respective authority from the Constitution. The one is not subordinate to the other in its own field… the authority of one is coordinate with that of the other”. বলছেন যে একজন মানে অঙ্গরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের অধীনে নয়, কেউ কারোর অধীনে নয়।
কিন্তু শুরু থেকেই আরএসএস জনসংঘ এই কাঠামো মেনে নেয়নি, এই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে তাদের তত্ত্ব খাড়া করেছে, এক প্রবল শক্তিশালী কেন্দ্র সরকারই নাকি দেশকে নিয়ন্ত্রণ করবে, সেটাই নাকি উন্নতির চাবিকাঠি। তারা মনে করে অঙ্গরাজ্য হবে একটা আনুষ্ঠানিক ব্যাপার, যার জন্য ওই ডাবল ইঞ্জিনের কথা তারা বলে, মানে দল একটা নেতা একটা শাসনেও সেই একটাই সরকার একটাই, তাহলেই চুকে গেলো। তাহলেই নাকি বিকাশ হবে। আসলে কী হবে তা তো আমাদের চোখের সামনে। শিক্ষায় গুজরাট সবচেয়ে নীচে, ওখানে ১৯৯৮ থেকে সেখানে বিজেপির শাসন আর ২০১৪ থেকে বিজেপিই ক্ষমতায়, তাহলে এটা হল কেন? অথচ এই সাত বছরে শিক্ষায় সবথেকে ওপরে কেরালা, তাদের সরকার বামপন্থীদের, কী করে হল? কর্মসংস্থান, সবচেয়ে বেশি এই বাংলায়, বিহার তলানিতে, উত্তরপ্রদেশ, কেন হল? কিন্তু এসব দেখার সময় নেই, সেই চেষ্টাও নেই আর এস এস – বিজেপির তারা চায় এক দল, এক সরকার, এক নেতা। তারা চায় একটা চরম ক্ষমতাপ্রাপ্ত কেন্দ্র সরকার। কৃষি রাজ্যের বিষয়? তো কী হয়েছে, ঘণ্টা খানেকের মধ্যে কৃষি বিল পাস করে দিল বিজেপি সরকার, সারা দেশের কৃষকরা রাস্তায়, তাতে কী? শ্রম আইন পাস করালো, এদিকে ট্রেড ইউনিয়ন শ্রম রাজ্যের তালিকায়, কিছুটা যৌথ তালিকায়। পুলিশ রাজ্যের তালিকায়, তাই নাকি, তাহলে এক নতুন পুলিশ তৈরি করো, যে যখন তখন যে কোনও রাজ্যে গিয়ে যাকে খুশি গুলি করে মারতে পারবে, গ্রেফতারও করতে পারবে। তৈরি হয়ে গেলো এনআইএ, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি। রাজ্য পুলিশ সকালে উঠে জানতে পারবে রাজ্যের দু’জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে এনআইএ। মানে দেশে একটাই সরকার আছে, তারা মানুষকে ভয় দেখাবে সিবিআই দিয়ে ইডি পাঠিয়ে, এনআইএ দিয়ে, ভিজিলেন্স দিয়ে, ইনকাম ট্যাক্স রেড করিয়ে কারণ অঙ্গরাজ্য তাদের মতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অধীন। তারা এটা চায়, সংবিধান সেটা বলে না, একবারও নয়।
আজ ঠিক সেই কারণেই ভ্যাক্সিন নিয়ে এই নৌটঙ্কি, করোনা নিয়ে এই চূড়ান্ত ব্যর্থতা, নির্বাচন করানো নিয়ে এই গাজোয়ারি। সমস্যাটা আমাদের সংবিধানে নেই, সমস্যা বিজেপির, সমস্যা তাদের সংবিধান বিরোধী দর্শনের। তারা দেশের সংবিধানকে ধ্বংস করে এক কেন্দ্র সরকার গড়তে চায়, যার হাতে থাকবে সব ক্ষমতা, যে ক্ষমতা দিয়ে রাজ্যের একজন আমলাকে বশ করে মিথ্যে কথা বলানো যায়, যে ক্ষমতাকে ব্যবহার করে রাজ্যের একজন আমলাকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা যায়। বিজেপি সরকার, নরেন্দ্র মোদির সরকার সেটাই চায়, সেটাই আমাদের রুখতে হবে। তার প্রথম ধাপ হল তামিলনাড়ু সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত, কেন্দ্র সরকার নয়, এবার থেকে বলা হোক যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার, অন্তত মুখে তাদের সীমাবদ্ধতাকে প্রতিদিন মনে করানো হোক। আমরা আমাদের এই অনুষ্ঠানে আজ থেকে আর কেন্দ্র সরকার কথাটা ব্যবহার করবো না, তার বদলে বলবো দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার। আপনারাও বলুন, প্রত্যেকে বলুন।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team