আগরতলা : প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা ৷ ঠিক তিনদিন পর ১০২টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে (বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন) মামলা করল ত্রিপুরা পুলিশ৷ তার মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে৷ ইতিমধ্যেই অ্যাকাউন্ট বন্ধের নোটিস দেওয়া হয়েছে ৷ অভিযোগ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক হিংসার বিষয়ে বিদ্বেষমূলক, ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে ৷
ত্রিপুরা পুলিশ জানিয়েছে, এই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট গুলির আইপি অ্যাড্রেস, মোবাইল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে৷ ত্রিপুরা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানান, আইনজীবীদের সাংবাদিক বৈঠকের বিষয়ের সঙ্গে হিংসার ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলিরও সম্পর্ক রয়েছে৷
চার আইনজীবী একটি স্বাধীন ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন৷ তাঁদের অভিযোগ, ধর্মীয় স্থানে হামলা চালানো হয়েছে৷ বেশ কিছু দোকান-বাড়িতে ভাঙচুর করা হয় ৷ ওই চার সদস্যের আইজীবীর দলটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় মিথ্যা-গুজব ছড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ ৷
তাঁদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘তদন্তকারীরা জানতে পারেন,সত্যতা ধ্বংসের ক্ষেত্রে ওই চারজনের ‘হাত’ রয়েছে৷ তাঁদের বিরুদ্ধে ছাড়াও ১৫০টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টকে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়৷
আরও পড়ুন-রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্যই ত্রিপুরায় অশান্তি, অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দলের
পরে ১০১টি অ্যাকাউন্টকে বাছা হয় ৷ বিদ্বেষ ছড়াতে যাদের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেছে পুলিশ ৷ এক পুলিশ কর্তা , ”কেস নম্বর ১৮১ পশ্চিম আগরতলা থানায় দায়ের করা হয়েছে ৷ ৬৮টি টুইটার অ্যাকাউন্ট, ৩১টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও দুটি ইউটিউব চ্যানেলের বিরুদ্ধে নোটিস পাঠানো হয়েছে ৷ এছাড়াও, এর আগেও বেশ কয়েকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল ৷ সোশ্যাল প্লাটফর্মগুলির কর্তাদের কাছে নোটিস পাঠিয়ে দ্রুত অ্যাকাউন্ট, পেজ মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হুঙ্কার যাত্রা ঘিরে রণক্ষেত্র, ধর্মস্থানে ভাঙচুর
এ প্রসঙ্গে রাজ্যে বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘পুলিশি পদক্ষেপ মত প্রকাশ, বাক-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে নয়৷ পুলিশ সত্য উদঘাটনে তদন্ত করছে ৷ গণতন্ত্রে মত প্রকাশ, বাক-স্বাধীনতার কথা বলা হলেও তারও কিছু বিধিনিষেধ আছে৷’
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিরাজিৎ সিনহা বলেন, ‘ত্রিপুরা সরকার ঘটনায় কম কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারত৷ আইনজীবীরা এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে আসেননি৷ যদি তারা সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে ব্যবস্থা নিতে পারে৷ কিন্তু, আইনের অপব্যবহার ঠিক নয়৷ সিপিএম নেতা পবিত্র কর বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় সাম্প্রদায়িক উষ্কানিমূলক পোস্ট করা বা শেয়ার করা উচিত নয় ৷ যা শান্তি বিঘ্নিত করে৷ কিন্তু, এখানে মনে হচ্ছে পুলিশের সমালোচনা করায় কিছু অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হল৷’